An article on the Independence day of Bangladesh
ডারুউইনের হ্যারল্ড থমাস আর বাংলার পটুয়া কামরুল – রাগিব আহসান চৌধুরী
ট্যাক্সি চালানোর একটা মজা হচ্ছে এ পেশায় অনেক পদের মানুষের সাথে দেখা হয়। কত বিচিত্র তাদের নেশা, পেশা এবং আভিজ্ঞতা। সেদিন হঠাৎ করেই পরিচিত হলাম একজন অ্যবরোজিন চিত্রকর বা আকিয়ে, হ্যারল্ড থমাসের সাথে। ভদ্রলোক আমার মনে দাগ কাটলেন যখন জানলাম তিনি অ্যবরোজিন পতাকার স্বপ্নদ্রষ্টা যা আমাদের লাল সবুজ পতাকার স্বপ্নদ্রস্টা পটুয়া কামরুল হাসানের কথা মনে করিয়ে দেয়।
হ্যারল্ড থমাস একজন ক্ল্যাসিকাল পটুয়া যিনি প্রায় ৩০ বছর ধরে ডারুইনে বসবাস করছেন। চিত্রকর্মের পাশাপাশি তিনি একজন লেখক, কবি এবং সমাজ নৃবিজ্ঞানি। তার সাথে আমাদের পটুয়া কামরুলের মিল পেলাম দেশের ও তার প্রকৃতির প্রতি গভীর ভালবাসা ও মমতা বোধের মাঝে। বনের পশপু াখি ও প্রকৃতি তার চিত্রকর্মে ফুটে উঠেছে সময়কে জয় করার মধ্যে দিয়ে। তার ছবি গুলির প্রধান দিক হচ্ছে আলো আর রংয়ের অপূর্ব মিলন। তার ছবি দেখলেই মনে পড়ে কবিগুরু রবিন্দ্রনাথের ‘আলো আমার আলো ওগো আলো ভুবন ভরা’ গানটির কথা।
হ্যারল্ড থমাসের জন্ম লিটিল টাউন আ্যলিস স্প্রিঙ্গের লুরিতয/ওয়াম্বিয়া ট্রাইবে। সে যুগের সাদা অস্ট্রেলিয়া নীতির জোরে ছোট বেলায় তাকে কেড়ে নেওয়া হয় বাবা মার কাছ থেকে; পাঠানো হয় সেন্ট জনস হোস্টেলে। মাত্র সাত বছর বয়সে তাকে পাঠানো হয় দঃক্ষিন অস্ট্রেলিয়ার সেন্ট ফ্রান্সিস আ্যংলিকান চাের্চ। এগার বছর বয়সে তাকে একটা সাদা পরিবারে দত্তক দেওয়া হয়; যার মাধ্যমে তাকে তার অ্যবরোজিনাল উত্তরাধিকারিত্ত থেকে করা হয় বঞ্চিত।
হাই স্কুলের লেখাপড়া শেষে তাকে স্কলারশিপ সহ লেখাপড়া করতে পাঠান হয় দঃক্ষিন অস্ট্রেলিয়ায়। এডেলেইড ইউনিভারসিটিতে সমাজ নৃবিজ্ঞানে লেখাপড়া করার সময় হ্যারল্ড অ্যবরোজিন সিভিল রাইটস মুভমেন্টের সাথে জড়িয়ে পড়েন। মজার বিষয় হচ্ছে ১৯৭১ সালে যখন আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলছে ঠিক সে সময় তিনি তার লাল, হলুদ ও কালো পতাকাটি উদ্ভাবন করেন যা এখন অ্যবরোজিন সংহতি, অধিকার ও ন্যায় বিচারের প্রতিক।
দুই ভুবনের দুই পটুয়া আর তাদের মাঝের অদ্ভুত মিল আমাকে বিস্মিত করেছে ।
ডারুউইন, ১০/১২/২০১০
Link requested by Chowdhury Md. SADARUDDIN | PDF & original source at Bangla-sydney.com