আশুরা ইতিহাস ও ১টি পর্যালোচানা
মহররম মাস আরবি বর্ষর প্রথম মাস এ মাসটিকে মহররম বা নিষিদ্ধ মাস বলা হয় যেহেতু এ মাসে যুদ্ধ বিগ্রহ নিষিদ্ধ। এ মাসেরই ১০ তারিখ আশুরা মাসে অভিহিত। আরবি ভাষায় আশুরা মানে দশম। অনেক ইসলামিক স্কলারের মতে এ দিনটি আল্লাহ্ মুসলিম জাতির সহায়তাকারী দিবস হিসেবে গণ্য করে থাকেন। এ বছরের ২৭শে ডিসে¤বর পবিত্র আশুরা ।
“নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছে গননার মাস বারটি যা সুনির্দিষ্ট রয়েছে আল্লাহর কিতাবে সেদিন থেকে যেদিন তিনি আসমান জমিন সৃষ্টি করেছেন। তন্মন্ধে ৪টি মাস নিষিদ্ধ।
( সূরা আততওবাদ-৩৬)
( এই চারটি মাসের ১টি হলো মুহাররাম)
ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) মদিনায় আগমন করে দেখতে পেলেন যে, ইয়াহুদীগন আশুরার দিনে রোজা পালন করে। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন ঃ কি তারা বলল এ অতি উত্তম দিন, এ দিনে আল্লাহ্ তাআলা বনী ইসলাইল কে তাদের শত্র“র কবল হতে নাজাত দেন, ফলে এ দিনে মূসা (আঃ) রোজা পালন করেন। রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বললেন আমি তোমাদের অপেক্ষা মূসার অধিক নিকটবর্তী। এরপর তিনি এ দিনে রোজা পালন করেন এবং রোজা রাখার নির্দেশ দেন।
বুখারী ১৮৭৩, মুসলিম , হাদীস-২৫১৮
আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত যখন নবীজি আশুরার রোজা রাখলেন তখন সাহারিক বললেন ও আল্লাহর রাসূল যিউল ও খ্রিষ্টানদের এটি অধিক সম্মানের দিন রাসূল বললেন আগামী বছর আল্লাহর ইচ্ছায় ৯ তারিখেও রোজা পালন করব। কিন্তু তিনি সেই বছরই মারা যান।
মুসলিম বি-৬, হাদীস-২৫২৮
আশুরার দিন শিয়া মুসলিম ইমাম হোসেন এর ইন্তেকাল উপলক্ষে রোজা পালন অপরিহার্য বলে মনে করে থাকলেও সুন্নি মুসলমানদের নিকট এটি ঐচ্ছিক। কারন আয়শা (রাঃ) হতে বর্ণিত (প্রথম) রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) আশুরার দিন রোজা রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন, যখন রমযানের রোজা ফরয হয়। তখন যার ইচ্ছা আশুরার রোজা রাখত যার ইচ্ছা রাখত না।
বুখারী-১৮৭৫
আব্দুল্লাহ্ ইবনে ওমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত নবী করীম (সঃ) বলেছেন কেউ চাইলে আশুরা দিন রোজা রাখতে পারে।
বুখারী-১৮৭৪
আশুরা এবং কোর-আনের আলোকে ১টি পর্যালোচানা
মানব জাতিকে পথ দেখানোর জন্য আল্লাহ্ তায়ালা ১ লক্ষ ২৪ হাজার পয়গম্বর নবীকে পাঠিয়েছিলেন তাঁদের মাঝে পবিত্র কোরআনে নবীজিকে ছাড়া ২৪ জন নবীর কাহিনী উল্লেখ করা হয়েছে। তারা প্রত্যেকে ছিলেন বনী ইসরাইলের তার মধ্যে ৪ জন বিশেষ ভাবে উল্লেখ যোগ্য নূহ (আঃ) ইবরাহিম (আঃ) আবার মসূা (আঃ) ঘটনা বিশেষ ভাবে উল্লেখ্যযোগ্য।
এর কারন হলো আল্লাহর এককত্ব মূসা (আঃ) বিশেষ ভাবে উল্লেখ করানো হয়েছে। এই ইসলাম ধর্মকে নতুন কিছু নয় সৃষ্টি কর্তা যে রয়েছেন তা মূসা (আঃ) এর জীবনীতে বিশেষ উল্লেখযোগ্য। তাছাড়াও নবী করীম (সঃ) এর সহিত মূসা (আঃ) এর জীবনীতে অধিক মিল বিদ্যমান। বনী ইসরাইল যখন মিশরে ফেরাউনের মাধ্যমে নিগৃহিত ও নিপিরিত হচ্ছিল তখন আল্লহ্ মুসা (আঃ) এর মাধ্যমে বনী ইসরাইলবাসীকে উদ্ধার করেছিলেন ফেরাউনকে ধ্বংস করার পূর্বে ৯টি সর্তক সংকেত দেয়া হয়েছিলেন যেন তার (ফেরাউন) অত্যাচার বন্ধ করে। যা রয়েছে সূরা আরাফ এর ১৩৩ নং আয়াত এবং নমল এর ১০ হতে ১২ নম্বর আয়াত এ।
সেগুলো হলো দুর্ভিক্ষ, বন্যা, ফসলধংসারী ফরিং, উকুন ও ঘুন, ব্যাঙ, রকত(সকল পানীয় ইষড়ড়ফ হয়ে যেত), পেলগ/ বসন্তু,হাত যা বগলের নীচে সাদা হয়ে বের হয়ে আসত এবং লাঠি (যা দারা নীল নদ দুই ভাগ করা হয়ে ছিল)
বৈধ তেমনি ভাবে পৃথিবী ধ্বংসের পূর্বে দজ্জালের সর্তক সংকেত রূপে অনেক লক্ষন এবং কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তন্মন্ধে ১০টি প্রধান কাজেই কুরআন শরীফে মুসা (আঃ) এর ঘটনা অধিক বর্ণনা করার পিছনে কারন হতে পারে ইতিহগাসের পুনরাবৃত্তি ঘটানো হবে। কেয়ামতের আগে যেমন মিথ্যা মেছায়া আসবে তেমনি সত্য মেছায়া এবং ইমাম মেহেদি আগমন করবেন।
পবিত্র কোরআন যেমন বলা হয়েছে
“আজকের দিনে আমরা উদ্ধার করব তোমার দেহ যেন তুমি তোমার পরবর্তীদের জন্য নির্দশন হয়ে থাকে।
সূরা ইউনুস ৯২
১৯ শতকের শেষের দিকে মিশরে নীল নন্দ হতে ফেরাউনের দেহ আবিস্কৃত হয়েছে। এটি ইতিহাসেরই পনুরাবৃত্তির শুরু। দেহটি এখনও কায়রো যাদুঘরে সংরক্ষিত রয়েছে।
কাজেই হয়তো এই আশুরাতেই আল্লাহ আবার অত্যাচারিত জাতি উদ্ধার করবেন। আল্লাহ তায়ালাই সবচেয়ে ভাল জানেন ।