ভার্চুয়াল চিঠি (পর্ব – চার)
? ভার্চুয়াল রিলেশন
যাই হোক মোটামুটি যা দেখছি এই ফেসবুকে অনেকেই সম্পর্কে জড়ানএই নিয়ে তৈরী হচ্ছে নাটক তৈরী হচ্ছে সিনেমা , ছড়া কাটছে ,কবিতায় চলছে বাকবাকুম ।
নেট ঘেটে একটা প্রসন্ন বর্তমান প্রসঙ্গ নিয়ে কবিতাই বলুন আর যাই বলুন ইনবক্সের লাগ ভেল্কি লাগ চোখে মুখে লাগ …..পেয়ে গেলাম , একবন্ধু পাঠালো .. বল্লো তোর ইনবক্স প্রেমের জন্য ভূমিকাটা জব্বর হবে , সেও জানে না কে লিখেছে , সংগৃহীত বলেই একটা খান্তি দেবার মতো ভার্চুয়াল সাহিত্যের স্পেস আছে । অনেক বলে আজকাল বিখ্যাত লেখকের নাম কালেকটেড , সেই রকম কথাই হলো ।
নিচের পত্র ধারাবাহিক ভাবেই যাচ্ছে , পত্রে অনেকের গানের লাইন তো কবিতার লাইন সিনেমার ডায়লগ থেকে নিজের আকুতি মিশিয়ে চিঠি গুলো লেখা হচ্ছে পর্বে পর্বে । যারা ধারাবাহিক ভাবে পড়ছেন
আশা করবো শেষ পর্যন্ত পাশেই থাকবেন । আপনাদের প্রেরণা টুকু আমার লেখার গতি বাড়িয়ে দেয় বহুগুণ।
সংগৃহীত অংশ –
প্রথমে পোক এলো, পোক ব্যাক হলো
এলো রিকু একখানা, করিয়া এক্সেপ্ট বন্ধুত্ব করিলো মানুষ দুই খানা…
কিছুদিন পর পুরুষ ব্যক্তি লিখিলো চ্যাটে হায়
অপরদিকে মেয়ে ব্যক্তিহ্যালো লিখে যায়
কখনো বা নারী আগেই করে নক
সেইটা দেখিয়া তো পোলায় পুরাই শক
যাই হোক হায় হ্যালো কেমন আছো
এই করে কাটে দিন
কিসে পড় কি করো
শুরু হয় দিন দিন
অতঃপর আসে কিছু ব্যাক্তিত্বের কথা
কি ভালো লাগে আর মন্দ টা কি
তা নিয়ে শুরু হয় কতকথা
অতঃপর কাছাকাছি মিলে যদি যায়
কোনো একজন নাম্বার চাইবার সাহস দেখায়
নাম্বার যদি তাদের হয় বিনিময়
সাথে সাথে ফোন আসে দেরি না হয়
তার আগে জিজ্ঞাসা করে নেই ভবে
এখন ফোন দিলে সমস্যা কি হবে?
নাহ উত্তর টা আসে বেশি ভাগ
ফোন দিয়ে কন্ঠ শুনে ছেলে তো অবাক
এ কথা সে কথা দু মিনিট হয়
অতঃপর ফোন রেখে ইনবক্সে মগ্ন হয়
এইভাবে কাটে কিছু মানুষের দিন
সব কিছু সাদা কালো শুধু ফেসবুক রঙ্গিন (তাদের কাছে)
অতঃপর দিন দিন কথা যায় বেড়ে
জুকার এর ইনবক্স ছেড়ে
মোবাইলের ইনবক্স যায় খালি বেড়ে
কিছুদিন পর তাদের দেখা তো হয়
সেইখান থেকে শুরু মন বিনিময়
কিছুদিন পর তাদের হয় গভীরপ্রেম
ফেসবুকে সিঙ্গেল ছেড়েলিখে ইন এন ওপেন
খুশিতে গলা ছেড়ে কাশে এহেম
কিছুদিন পর তাদের বাড়ে ব্যাস্ততা
অনলাইনে আসে ঠিকই হয়নাকো কথা
কেউ না কেউ দেখায় অজুহাত
ছিলাম না অনলাইনে সকালে মেসেজের উত্তরে তাই
বলতে পারিনি সুপ্রভাত
অপরপক্ষ তখন চেতে যায় খুব
সিন করেছো তুমি মিথ্যা বল কেনো
অপর প্রান্তের জবাব নাই সেটা দেখে
মাথা তার গরম হয় আপনার দোষে
অতঃপর কিছুদিন এইভাবে চলে
হঠাৎবন্ধুত্বের খাতা থেকে নাম কাটা পড়ে
তবু যদি আদার মেসেজে কেউ মেসেজ করে
কোনো একজন বিরক্তি তে ব্লক তারে মারে
বাহ এই করেই যদি রিলেশনশিপ হয় তবে মন্দ তো নয়, আজ লিষ্টেড এক ফ্রেন্ড দেখলাম লিখেছেন, যেই হারে ফেসবুকে রিলেশনশিপ চেঞ্জ হয় এই হাড়ে তারা জামা কাপর পালটায় কিনা সন্দেহে আছি, অনেক্ষন ভাবলাম কি কমেন্ট করা যায়, নাহ কোনো কমেন্ট পেলাম না লিখার মত, অবশেষে লাইক টি ও উঠিয়ে নিলাম, কি আর করা দেখিনি তো না দেখাই থাক, লাইক টা না উঠালেও পারতাম
বাদ দেই উপরে যা লিখলাম তা লিখার কথা ছিলোনা
হুম ইনবক্সে কথা হয়, কাছাকাছি মিলে গেলে নাম্বার টা ও দেওয়া নেওয়া হয়, বাড়ে ফোনে কথা, কোনো একদিন দেখা করে মনের বিনিময় টাও হয়ে যায় সেটা অস্বাভাবিক নয়, সবাই ম্যাচিউড, না হলে তো আর দেখা করার সাহস আসেনা,
তো এইভাবেই শুরু হয় প্রেমের শুরুটা, ।
(শেষ )
এমনি করেই তো রোজ রোজ কত কত প্রেম পাচ্ছে পরিনতি কিছু খাচ্ছে ধোকা আর কিছু প্রেম শুধু আকাশ পাতাল সাক্ষি রেখে করছে দিন পার … কত কত ঘটনার হচ্ছে উদ্ভব , কিছু ঘটনা ভেঙ্গে দিচ্ছে মন , খুন খারাবিও কম নয় , সামাজিক হেয় করে , হচ্ছে জিম্মি কতক ।
ইনবক্স যতটা রোমান্টিক ততটাই প্যাথেটিক । এই সবই বিষয় নির্ভর করে লিখছি নতুন এক ইনবক্সের প্রেম কাহিনী । আজ চতুর্থ প্রস্তাব পর্ব ,
?প্রেমিকার চিঠি -৪
ফেসবুকে বিদ্রূপে সাজানো সব কৃষ্ণমৃত্যু আমি দেখেছি ঢের ।
রাত্রির আকাশ জাগে বিজলি বিজলি , তুলোধুঁনো গল্পের ঝড়
শ্রাবণ দিনের প্রয়াণ সাঙ্গ হয় ,অর্চিত দূর্বাঘাসে।
তখন সকলে কেউ ভেড়া নয়ত কেউ পাঁঠা সাজে ।
কারো বলি হয় আর কারো চামড়া ছিলা অবস্থা ।
বিশ্বাস করুন আমার যেন আজকাল ফেসবুকে মৃগয়া উৎসব শুরু হয়েছে ।
সবুজ বাতি দেখে দেখে , হরিণের হিরে চোখ নাচে,নাচে বৃষ্টিবৃক্ষ, প্যারাডাইস বার্ড, নীলাভ ফড়িং, শ্বেত প্রজাপতি , গলা উঁচু করে ডাকে ঘুঘু ।
আপনাকে আমি আর দশজনের মতো ভাবতে যাবো কেন ? বয়েই গেছে ! মানুষ তো একটু আধটু চিনি নাকি !, আমার বয়স হয়েছে ,কপালে বলিরেখার চিহ্ন কতক ।
আমি শুধু শুধু বয়সের সংখ্যা ঝুলিয়ে মোমবাতি ফুঁকিয়ে কেক কেটে এই ঘাটে আসিনি ।
মিথ্যে বলবো না … কতবার যে আপনার ইনবক্স ঢু মেরে এসেছি , নাহ নেই -নেই , না কোন শব্দ না কোন চিহ্ন । আমার অপেক্ষা যাপনের বিষ , নীলকণ্ঠ বেয়ে বেয়ে আজ যেন অমৃতের সন্ধ্যান পেলো ।
তৃষ্ণার ওষ্ঠজ্বালা শান্ত শীতল হলো যেন । মেসেজের প্রতিটি শব্দ শিবরঞ্জনী সুরে সুরে খুলে দিলো জীবনের উদ্বেল আলোপ্রার্থনা।
চিঠি তো নয় যেন দ্যুতিমান হয়ে সামনে এসে বসে মুচকি হেসে আমাকেই লজ্জা পাইয়ে দিলো । ফুলের ফুলকি জ্বালিয়ে এভাবে কেউ আত্মা খুঁড়ে রক্ত বের করে বুঝি ?
জানতাম অলীক অনুভবের গুলো চিরকাল ব্যাখ্যাহীন , কিন্তু না আমার ভুল ভাঙ্গলো আপনার বিভঙ্গ মুছে ফেলা যমুনার ঢেউয়ের মতো কথার বন্যায় ।
বড্ড দেখতে ইচ্ছা হলো আপনার মুখ , ছুটে গেলাম আপনার টাইম লাইনে কিন্তু সব আশা ছাই , আপনি তো প্রকৃতি আর ফুল লতা পাতার ছবি সেঁটে রেখেছেন । আপনি কি মানুষ না ভূত ?
কি করে বুঝবো বলুন , ছবি নেই কোন এক্টিভিটি নেই , না পোষ্ট না ভিডিও , কিচ্ছু নেই , শিশির আপ্লুত ঘাসের মত, আঁজল ভরা সবুজ মাখা মুখ কতোটা জাজ্বল্যমান হয় দেখবার বড় সাধ হলো যে ।
আমার যাচিত আবদার , যদি কোনভাবে আপনাকে দেখবার সুযোগ পেতাম, আলোকসংকেত আমি অপেক্ষায় থাকলাম , চিকন ভোরের মত আলো দান করে আপনাকে দেখবার সুযোগ করে দেবেন মশাই ?
অদ্ভুত একটা নিয়ন নীল নগরের বুকে ফুরফুরে আমার এখনও বৃক্ষমন, চক্ষুময় ইক্ষুর মিষ্টি মদনেশা
আঙ্গিনার পুষ্প জাফরিতে ফরাসী ঘ্রাণ, আমার আঁচলে শিথান , স্তনে নহর ,চোখে তৃষ্ণা অতৃপ্ত প্রেমিকার ।
আপনি একঝলকে, শিশু হয়ে আমাকে মাতৃত্বের স্বাদ দিয়েছেন ,দিয়েছেন প্রেমিকা হবার সুযোগ ।ওংকারে বিদীর্ণ করছি আকাশ অকারণে কটুবাক্য বলে আপনার মনে।
কি করে শব্দের গুলি ছুঁড়ে দুঃখ দিতে পারি আমি , সেই অপরাধে আমি কাঁদি ।
তন্নতন্ন করে লুণ্ঠন করে গেলেন আমার আজন্ম অহংকার ।তীব্র তীরের মতো বিঁধে গেলো অন্তরে ,যেন শুধু এই টুকু বলে যাই আজ , যদিওডিজিটাল বায়বীয় প্রেম প্রেম খেলাতে আমার তেমন আস্থা নাই , কিন্তু … “আমি চিনেছি চিনেছি তোমারই মন
আমি হাওয়ার মত উত্থিত হবো আপনার দীর্ঘশ্বাসে।
গঙ্গার প্রাণজল বুকে ধরে আমি বয়ে যাব আপনার রক্তে ।আদরকাতর তটরেখায় বিলিয়ে দেব আমার ধারনক্ষমতার সবটুকু ।
নেবেন ?
Najmin Mortuza
দার্শনিক বোধ তাড়িত সময় সচেতন নিষ্ঠাবান কবি। চলমান বাস্তবতাকে ইতিহাস-ঐতিহ্যের পরম্পরায় জারিত করে তিনি কাব্য রূপান্তরে অভ্যস্ত। কাব্য রচনার পাশাপাশি ক্ষেত্রসমীক্ষাধর্মী মৌলিক গবেষণা ও কথাসাহিত্য সাধনায় তাঁর নিবেদন উল্লেখ করার মতো। গবেষণাকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত ফোকলোর ও লিখিত সাহিত্যঃ জারিগানের আসরে "বিষাদ-সিন্ধু" আত্তীকরণ ও পরিবেশন পদ্ধতি শীর্ষক গ্রন্থের জন্য সিটি-আনন্দ আলো সাহিত্য পুরস্কার ২০১২ অর্জন করেছেন।
Related Articles
Hasina’s peace model and realities on the ground
Recently in New York, the Bangladesh prime minister Sheikh Hasina presented her new global peace model for development at the
Durga Puja and Religious Practice in Australia
Durga Puja is the most holy festival of Hindus. In Australia, only 12 families in New South Wales started Durga
প্যারিসের চিঠি ৬: ওয়াসিম খান পলাশ প্যারিস থেকে
আইফেল টাওয়ারের নাম কে না শুনেছে। বিশ্বের বিষ্ময় এই টাওয়ারটি ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের বুকে মাথা উচু করে দাড়িয়ে বিষ্ময় ছড়াচ্ছে।