ইন্টারনেটে শেখ হাসিনার সঙ্গে সেনা কর্মকর্তাদের বৈঠকের অডিও টেপ প্রচারে কোনো ক্ষতি নেই

ইন্টারনেটে শেখ হাসিনার সঙ্গে সেনা কর্মকর্তাদের বৈঠকের অডিও টেপ প্রচারে কোনো ক্ষতি নেই

নাঈমুল ইসলাম খান:

বিডিআরের বিদ্রোহ ও নৃশংসতার প্রেক্ষাপটে সেনাবাহিনীর মধ্যে তীব্র অসন্তোষ ও ক্ষোভের জš§ হয় এবং বিভিন্নভাবে তার প্রতিক্রিয়া প্রকাশিত হতে থাকে এবং তারই প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গত ১ মার্চ রোববার সকাল ১১টায় সেনাকুঞ্জে অফিসারদের একটি সভা আয়োজন করা হয়। যেখানে অনেক সেনা কর্মকর্তার আবেগতাড়িত ও উত্তেজনা মিশ্রিত বক্তব্য ও আচরণ সম্পর্কে এখন প্রায় সকলে জানেন।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সেনা কর্মকর্তাদের বৈঠকের একটি অডিও রেকর্ড ইন্টারনেটে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। একপর্যায়ে কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে ইন্টারনেটে এর প্রচার ঠেকানোর উদ্যোগ নেয়া হয়। সর্বশেষ দেখা যাচ্ছে সেই অডিও রেকর্ড ইন্টারনেটে আবার পাওয়া যাচ্ছে।

সেই সভার অডিও রেকর্ড সর্বসাধারণের মধ্যে চলে আসায় কারো কোনো ক্ষতি হয়েছে কিনা অথবা এটি প্রচার হতে দেয়া উচিত হয়েছে কিনা এসব নিয়ে বেশ বিতর্ক হচ্ছে। আমার ব্যক্তিগত মত, এই অডিও রেকর্ড পুরোটা শুনলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ধৈর্য, উদারতা, সক্ষমতা ও সাহস সম্পর্কে শ্রদ্ধাবোধ বাড়বে বৈ কমবে না। এ অডিও রেকর্ড থেকে সেনাবাহিনী সম্পর্কেও কোনো খারাপ ধারণা জনমনে তৈরি হওয়ার আশঙ্কা নেই। সেই সভায় কয়েকজন সেনা কর্মকর্তা অসঙ্গত ও উদ্ধত আচরণ করলেও সামগ্রিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে সেনাবাহিনীর মধ্যে সৃষ্ট ব্যাপক বিক্ষোভ প্রশমনে এই সভা খুব সহায়ক হয়েছে বলেই সকলে স্বীকার করবেন। সেই অর্জনের বিবেচনায় দু’-একজন ব্যক্তির দায়িত্বজ্ঞানহীন সীমা লঙ্ঘনমূলক আচরণও ক্ষমাসুন্দর ও সহৃদয় বিবেচনা পেতে পারে।

এই সভা আয়োজনে সেনাবাহিনীর শীর্ষ দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা যথেষ্ট প্রাক-প্রস্তুতি ও সতর্কতা নিয়েছিলেন। সাধারণত এধরনের সভা বা দরবারে মঞ্চের সামনের প্রথম সারি থেকে শেষ সারি পর্যন্ত সেনা কর্মকর্তারা তাদের র‌্যাঙ্ক ও স্ট্যাটাসের ক্রমানুসারে আসন বিন্যাস করে থাকেন। প্রথম সারিতে যদি থাকেন মেজর জেনারেলরা, পরের সারিতে থাকবেন ব্রিগেডিয়ার তারপর কর্নেল, তারপর লেফটেন্যান্ট কর্নেল, তারপর মেজর, ক্যাপ্টেন ইত্যাদিÑ এই ক্রমানুসারে ঘরের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত আসনের ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে।

প্রধানমন্ত্রীর সেই সভায় অতিরিক্ত সতর্কতার জন্যে এরও ব্যতিক্রম করা হয়। দায়িত্বশীল সিনিয়র কর্মকর্তাদের পুরো ঘরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে স্ব স্ব গ্র“পের সঙ্গে বসানো হয় এমনভাবে যেন তারা যেকোনো পরিস্থিতিতে তাৎক্ষণিকভাবে সরাসরি হস্তক্ষেপের মাধমে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। সেই সভায় অনেক দায়িত্বশীল কর্মকর্তাই সীমাহীন উত্তেজিত তরুণ অফিসারদের টেনে ধরে বসিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার প্রয়াস পেয়েছেন। যতদূর শুনেছি বেশ কিছু বেসামাল বিক্ষুব্ধ কর্মকর্তাকে এই সভায় অংশগ্রহণ করতে না দিয়ে বাইরে রাখা হয়েছে।

আমরা যদি এ সকল তথ্য জেনে বুঝে তারপর ঘটনার বিশ্লেষণ করি এবং বিভিন্নজনের দায়-দায়িত্ব সম্পর্কে মন্তব্য করি কেবল তখনই সেটা হবে সঠিক ও বাস্তবসম্মত। আর ইন্টারনেটে এই টেপ প্রচারে বাধা দেয়ার কোনো কারণ আমি দেখি না।

Link requested by Anim Rahman | original source


Place your ads here!

No comments

Write a comment
No Comments Yet! You can be first to comment this post!

Write a Comment