অতঃপর হুমায়ূন আহমেদ
দিলরুবা শাহানা: হুমায়ূন আহমেদ ভক্তপাঠকের ভাল লাগার জায়গায় চিরস্থায়ী আসন পেয়ে গেছেন বললে ভুল বলা হবেনা। তার পাঠকেরা শুধু লেখা নয় লেখক হুমায়ূন আহমেদকেও এমন আসনে বসিয়েছেন যা ব্যাখ্যা করা বা বোঝানো কঠিণ। এবিষয়ে আমার সামান্য অভিজ্ঞতা বর্ননা করছি। গত বছর অর্থাৎ অক্টোবর ২০১৬এ মেলবোর্নের আবৃত্তিসংগঠন ‘কবিতায়ন’এর অনুষ্ঠান। কবিতা পড়ার দাওয়াত পাই। অভিনবত্ব ছিল উপস্থাপনায়। যেমন প্রত্যেকেই অল্পকথায় সেই বিশেষ কবিতা বিষয়ে নিজস^ স¥ৃতি জড়িত অনুভূতি বা উপলব্ধির কথা বর্ননা করে তবেই কবিতা শুরু করছিলেন। আমি গুলতেকিন খানের কবিতার বইটি সবে মাত্র হাতে পেয়েছি। ভাল লাগলো কবিতাগুলো। আমি ওই বই থেকে পড়ার জন্য বেছে নেই ‘সাতকাহন’ শিরোনামের ছোট একটি কবিতা। কবিতাটি পড়ে আমার উপলব্ধি হল এ কবিতায় যেন কবির জীবন বিবৃত হয়েছে এবং তা উলে¬খও করলাম। মাত্র ১২পংক্তিতে ৫৭শব্দে কি অসাধারন কাহিনী বর্নিত। ওই কবিতা পাঠের কারনে আমি অস^স্থিকর পরিস্থিতিতে পড়লাম। কেউ বললেন এটি কেন পড়ার জন্য বেছে নিলাম? অন্য আরেকজনের তাচ্ছিল্যভরা মত ‘ওহ্ গুলতেকিন খানতো ছন্দ মিলিয়ে লিখেন’(ভাবটা এমন যে ওগুলোতো পদ্য!)। একজন মহা বিরক্তি নিয়ে বললেন ‘গুলতেকিন খান অত্যন্ত সচ্ছল পরিবারের মেয়ে; উনার উচিতই হয়নি হুমায়ূন আহমেদের মতো সাধারন মানুষকে বিয়ে করা!’ আমি বিভ্রান্তিতে পড়লাম। প্রথমতঃ ভাবলাম আমি কি কবিতা আদৌ বুঝিনা? দ্বিতীয়তঃ ধনী কবি বলেই কি গুলতেকিন খানের কবিতা পড়া হয়? আসল কথা হল এরা সবাই হুমায়ূন আহমেদের অন্ধভক্ত। গুলতেকিন খান ধনী পরিবার থেকে এসেছেন এইকথা স^য়ং হুমায়ূন আহমেদ ও তাঁর ভাই লেখক জাফর ইকবালের লেখা থেকে আমরা সবাই বহুআগেই জেনে গেছি। গুলতেকিনের গল্প হুমায়ূন আহমেদ বলতে শুরু করেছিলেন বাসর রাতের ঘটনা দিয়ে। সেই যে ম্যাজিক দেখিয়ে নববধুকে চমকে দিতে চেয়েছিলেন। ম্যাজিক রহস্য ধরতে পেরে লেখকের বালিকা বধু হেসে কুটিকুটি। হুমায়ূন আহমেদ কবিতা খুব একটা লিখেন নি অথবা আমি হুমায়ূন আহমেদের বেশী কিছু পড়িনি তাই হয়তো তেমন ভাল করে জানিনা। তবে হুমায়ূন আহমেদ কবিতা পছন্দ করতেন, কবিদের সš§ানার বিষয়ে সচেতন ছিলেন। তাঁর অন্যতম উলে¬খযোগ্য সৃষ্টি ‘শঙ্খনীল কারাগার’ উপন্যাসটির নামকরণ করেন কবি রফিক কায়সারের কবিতার নামে। হুমায়ূন আহমেদের একটি কবিতার কথা মনে পড়ছে ‘আজš§ সলজ্জ সাধ…..’।
তো আমি যখন আমার কবিতা যাচাইবাছাই বিষয়ে দ্বিধাধন্ধে ভুগছি তখনই এক স^নামধন্য জ্যেষ্ঠ কবির সাক্ষাৎ পেলাম। ওই কবির মত শুনলাম ‘গুলতেকিন ভাল কবিতা লিখে’। হুমায়ূন আহমেদ একদা কোন এক লেখায়(সম্ভবতঃ হুমায়ূন আহমেদের ‘আমি’ বইতে পড়েছি) বলেছিলেন ‘একজন কবি যাচ্ছেন উঠে দাড়াও’। কবিদের বিষয়ে যাঁর এমন গভীর সš§ানবোধ আজ উঁনি বেঁচে থাকলে গুলতেকিন খানের কবিতা তাঁকে অবশ্যই ভাবাতো।
[pdf_attachment file=”1″ name=”অতঃপর হুমায়ূন আহমেদ”]
Related Articles
কেনবেরার দূর্গা পূজা ও তার শিশু শিল্পীরা
বরাবরের মতো এবারেও কেনবেরার বাংলাদেশীরা বারোয়ারি দূর্গাপূজা করেছিল । ২০০৬ সালে এই পূজার শুরু হয়েছিল কেনবেরার ফ্লোরির হিন্দু মন্দিরে ।
২৫ মার্চ এবং আজকের আমরা
……. আজ মধ্যরাতে শহর জুড়ে নামবে অদৃশ্য জলপাই রঙের ট্যাংক .. গর্জে উঠবে কিছু প্রেতাত্মা কন্ঠ – “খতম কার দো
স্বপ্ন
যদি আমি স্বপ্ন হতাম বাস হতো আমার স্বপ্নপুরীতে মাঝে মাঝে দেখা দিতাম তোমাদের এই ধরণীতে! মেঘের ডানায় ভেসে এসে কারো