by Priyo Australia | March 28, 2017 2:44 am
‘আমি বাঁচতে চাই, পৃথিবীর সুন্দর আলোতে সবার মাঝে আমি বেঁচে থাকতে চাই, আমাকে বাচাঁও। আমি আমার ভবিষ্যৎ স্বপ্ন পূরণ করে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করতে চাই।’ এমন আকুতি করে কথাগুলো বলছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্রী নাজনীন সুলতানা।
নাজনীন সুলতানা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের মাস্টার্স এর একজন মেধাবী শিক্ষার্থী। সম্প্রতি মাস্টার্স পরীক্ষা শেষ করেছেন। পরিবারের অনুপ্রেরণা ও তার অদম্য ঐকান্তিক চেষ্টায় দেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যাপিঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক স্বপ্ন নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু আজ তার ভবিষৎ স্বপ্ন বিলীন হতে চলেছে। তার জীবন প্রদীপের দুইটা কিডনিই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নেফ্রলজি ডিপার্টেমেন্টের মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। পরিবার ও তার সহপাঠীরাও আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন তাকে সবার মাঝে আবার সুস্থ অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে। চিকিৎসকরা জানালেন দ্রুত নাজনীনের কিডনি পুনঃস্থাপন করা না হলে তাকে বাঁচিয়ে রাখাটা খুবই কঠিন।
নাজনীনের বাবা আবুল কালাম আজাদ জীবনের উপার্জিত সবকিছুর বিনিময়ে মেয়েকে ফিরে পেতে চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তিনি একজন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা। মেয়ে জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ায় অবসরের টাকা দিয়ে কোনোমতে তার চিকিৎসার ব্যয়ভার চালিয়ে যাচ্ছেন। এখন এমন অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে চিকিৎসা ব্যয় বহুল হওয়ায় অনেকটা অসহহায়ের মতো জীবনযাপন করছেন তিনি। তার পক্ষে এককভাবে মেয়ের চিকিৎসা চালানো খুবই কষ্ঠ সাধ্য হয়ে গিয়েছে।
নাজনীনের বড় ভাই আল রাশেদের সাথে প্রতিবেদকের কথা হলে তিনি জানান, নাজনীন ছোট বেলা থেকেই খুব চঞ্জল ও মেধাবী। এসএসসি ও এইচএসসিতে ভাল রেজাল্ট করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগে ভর্তি হয়েছিল। আমাদের পরিবার ও দেশের মানুষকে নিয়ে তার অনেক স্বপ্ন। সে একজন স্বাধীনচেতা পরোপকারী মেয়ে। সবার সাথে হাসিখুশিতে অভ্যস্ত। আজ তার জীবন প্রদীপ নিভু নিভু্। ঘাতক রোগ তার শরীরে কখন বাসা বেঁধেছে তা কখনও কেউ বুঝতে পারিনি। হঠাৎ করে গত বছর (২০১৬ সাল) সেপ্টেম্বের মাসে অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসা নেওয়ার পরপরই কিডনি সমস্যা ধরা পড়ে। তার পর থেকেই আমাদের সাধ্যানুয়ায়ী চিকিৎসা চলছে। কিন্তু এভাবে আর কতদিন চলবে। তার শরীরের অবস্থা খুবই খারাপ। দিন দিন অবনতিই হচ্ছে। এখন প্রতি সপ্তাহে তিনদিন ডায়ালাইসিস করা হচ্ছে। কিন্ত তার আরও উন্নত চিকিৎসা করা একান্ত প্রয়োজন। তার কিডনি বদলানোটা খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে।
তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নেফ্রলজি ডিপার্টেমেন্টের চিকিৎসক অধ্যাপক মো. রফিকুল আলমের বরাত দিয়ে জানান, এই রোগটিকে মেডিকেল পরিভাষায় ESRD (End Stage Renal Disease) বলা হয়ে থাকে। নাজনিনের দুটো কিডনিই নষ্ট হয়ে গেছে এবং কিডনি পুনঃস্থাপন করা প্রয়োজন। প্রয়োজনে দেশের বাইরে নিয়ে চিকিৎসা করানো। এখন তার জীবন সংকটাময়। খুব দ্রুতই এই ব্যবস্থা করা দরকার বলেও জানান চিকিৎসক রফিকুল আলম।
ভাই আল রাশেদ আরও জানান, আমাদের সামর্থে্যর সবকিছু দিয়ে চেষ্টা করছি। কিন্তু আর কতদিন এভাবে বোনটাকে বাঁচিয়ে রাখব। নিজেদের অর্থনীতির অবস্থা এখন খুবই খারাপ। এতো ব্যয়বহুল চিকিৎসা করানো আমাদের পরিবারে পক্ষে অনেক কষ্ঠকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই আমাদের সমাজের বিত্তবান ও সরকারের প্রতি তিনি আহবান জানিয়ে বলেন, আমার ছোট বোনটাকে বাঁচান। আমরা তাকে আমাদের চোখের সামনে এই কঠিন রোগে তার জীবন প্রদীপ নিভে যেতে দেখে খুবই কষ্ট হচ্ছে। তাই আপনারা আমাদের সহযোগিতা করুন। আপনাদের সহযোগিতায় আমার ছোট বোনটি আবার সবার মাঝে ফিরে আসুক।(সহযোগিতার প্রয়োজনে যোগাযোগের নাম্বার : আল রাশেদ (বড় ভাই)- ০১৫৩৪-৩৫৬৪৬০)।
নাজনীনের বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুরাও তাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে যাচ্ছে। নাজনীনের বিশ্ববিদ্যালয়ের সহপাঠী তানভীর জানান, নাজনীনের মতো বন্ধু পাওয়াটা সৌভাগ্যের। সে যেমন মেধাবী তেমনি পরোপকারী। বিশ্ববিদ্যালয়ের কারও যদি রক্তের প্রয়োজন হতো সবার আগেই নাজনীন ছুটে আসত। এমনকি হাসপাতালে দিনের পর দিন অসুস্থ বন্ধুকে নিয়ে থেকেছে সে। বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কোনো সামাজিক কর্মকাণ্ডে ঝাঁপিয়ে পড়ত সে। আজ সেই পরোপকারী বন্ধুটি মৃত্যুর সাথে লড়ছে।
তিনি আরও বলেন, আমরাও তাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। আমরা তাকে আগের মতো আমাদের কাছে ফিরে পেতে চাই।
source http://www.banglakatha.com.au[1]
Source URL: https://priyoaustralia.com.au/save-life/2017/%e0%a6%86%e0%a6%aa%e0%a6%a8%e0%a6%be%e0%a6%b0-%e0%a6%8f%e0%a6%95%e0%a6%9f%e0%a7%81-%e0%a6%b8%e0%a6%b9%e0%a6%af%e0%a7%8b%e0%a6%97%e0%a6%bf%e0%a6%a4%e0%a6%be-%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%9a%e0%a6%be/
Copyright ©2024 PriyoAustralia.com.au unless otherwise noted.