অস্ট্রেলিয়া বসবাসরত মুসলিমা আক্তারকে নিয়ে বাংলাদেশের পত্রিকায় ফিচার

by Priyo Australia | November 20, 2013 4:35 am

অদ্ভুত জীবন মেয়েটির। গ্রামের অনেকের মতো তাঁরও বিয়ে হয় অল্প বয়সেই। নিজের সব স্বপ্ন চেপে রেখে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয়েছিল বাবার ইচ্ছার মর্যাদা দিতে গিয়ে। কিন্তু স্বপ্ন দেখা শেষ হয় না মেয়েটির। বিয়ের পর সামাজিক প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে লেখাপড়া চালিয়ে যেতে লাগল। একসময় বিয়েটাও ভেঙে গেল। তত দিনে তাঁর কোলজুড়ে এসেছে মেয়ে জেরিন। মেয়েকে নিয়ে শুরু হলো নতুন সংগ্রাম। সেই সংগ্রামে জিতেছেন মুসলিমা আক্তার। এখন তিনি স্কুবা ডাইভার। গত ২৩ অক্টোবর মুসলিমা আসেন প্রথম আলোর কার্যালয়ে। কথা হয় তাঁর সঙ্গে। সাধারণ এক মেয়ের ডুবুরি হয়ে ওঠা সহজ নয়। দরকারি প্রশিক্ষণ নিয়ে মুসলিমা এখন অনেককে নিয়ে যান সমুদ্রের অতল জলে। দেখিয়ে দেন সমুদ্রের জলতলে থাকা প্রকৃতির অসাধারণ সৌন্দর্য। অস্ট্রেলিয়ায় ডুবুরিদের প্রশিক্ষণও দেন তিনি। মুসলিমা এখন লাইসেন্সধারী ‘মাস্টার স্কুবা ডাইভার ট্রেইনার’।

গাজীপুরের কাপাসিয়ায় জন্ম মুসলিমা আক্তারের। পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে তিনি চতুর্থ। ২০০৩ সালে দিগাব আমজাদিয়া সিনিয়র কাপাসিয়া মাদ্রাসা থেকে ফাজিল পাস করেন। পরিচিত এক বড় ভাইয়ের সহায়তায় ২০০৫ সালে খাদ্য ও পানীয় বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিতে ভারতে যান। প্রশিক্ষণ শেষে ভারতের হায়দরাবাদে জেভেনিয়া হোটেলে কাজ শেখেন। বছর দুয়েক সেখানে কাজও করেন। ভারত থেকে পাড়ি জমান মালদ্বীপে।

মালদ্বীপের ফারিবা নামের এক প্রতিষ্ঠানে কিছুদিন খাদ্য ও পানীয় নিয়ে কাজ করেন। তারপর সেখানে হিসাবরক্ষক হিসেবে কাজ পেয়ে যান। এই মালদ্বীপের সাগরই তাঁকে প্রথম টানে। হঠাৎ করে সাগরের তলদেশ দেখার আগ্রহ ইচ্ছা জাগে মুসলিমার মনে। কিছুতেই সে ইচ্ছা দমিয়ে রাখতে পারেন না। আবার হাতে পর্যাপ্ত টাকাও নেই। টাকা জমাতে শুরু করেন। এরপর নিজের স্বপ্ন পূরণ, অর্থাৎ ডুবুরি হওয়ার জন্য প্রশিক্ষণ নিতে থাকেন। ছয় মাসে তিনটা বিশেষ প্রশিক্ষণ কোর্স সম্পন্ন করেন। হয়ে যান ‘পেডি মাস্টার স্কুবা ডাইভার’। এরপর আর তাঁকে থেমে থাকতে হয়নি। ভারতে যাওয়ার সময় মেয়ে জেরিনকে মায়ের কাছে রেখে এসেছিলেন মুসলিমা। আর্থিকভাবে সচ্ছল হওয়ার পর মেয়েকে নিজের কাছে আনেন।

মুসলিমা আক্তার এখন পাডি নামের একটি আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণকেন্দ্রে ডাইভিং প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করছেন। থাকেন অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডের কেয়ার্নসে। মেয়েও থাকে তাঁর সঙ্গে।এবার মেয়েকে নিয়ে বাংলাদেশ ঘুরতে এসেছিলেন। তিনি বলেন, ‘অনেক মানুষকে প্রতিদিন সাগরের তলদেশের সৌন্দর্য দেখাতে নিয়ে যাই। নানা দেশের মানুষের ভিড়ে শুধু নিজের দেশের মানুষকে খুঁজি। হঠাৎ যদি কাউকে পেয়ে যাই, কী যে আনন্দ হয়। তা কাউকে বোঝানো যাবে না।’

Source: www.prothom-alo.com

Source URL: https://priyoaustralia.com.au/readers-link/2013/%e0%a6%85%e0%a6%b8%e0%a7%8d%e0%a6%9f%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%87%e0%a6%b2%e0%a6%bf%e0%a7%9f%e0%a6%be-%e0%a6%ac%e0%a6%b8%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%b8%e0%a6%b0%e0%a6%a4-%e0%a6%ae%e0%a7%81%e0%a6%b8%e0%a6%b2/