একাত্তর প্রশ্নে বাংলাদেশের কাছে লিখিত ক্ষমা চেয়েছে পাকিসত্মান

by Priyo Australia | May 4, 2008 1:16 am

সাক্ষাৎকারে হাইকমিশনার আলমগীর বাবর

আনিস আলমগীর: ঢাকায় নিযুক্ত পাকিসত্মানের হাইকমিশনার আলমগীর বাবর বলেছেন, এটা ঠিক নয় যে পাকিসত্মান একাত্তর প্রশ্নে বাংলাদেশের কাছে ক্ষমা চায়নি, বরং লিখিতভাবেই তা চেয়েছে। ১৯৭৪ সালের ৯ এপ্রিল নয়া দিলি্লতে বাংলাদেশ-ভারত-পাকিসত্মানের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তিতে এসবের স্পষ্ট উল্লেখ আছে। তৎকালীন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. কামাল হোসেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শরণ সিং-এর সঙ্গে ওই চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী পাকিসত্মানের পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী আজিজ আহমেদ পাকিসত্মান সরকারের পক্ষে সংঘটিত অপধের নিন্দা এবং এর জন্য গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছেন। ওই চুক্তিতে তিন মন্ত্রী আরও বলেন, ‘পাকিসত্মানের প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণ গ্রহণ করে তিনি বাংলাদেশ সফর করবেন এবং বাংলাদেশের জনগণের কাছে সম্পর্ক পুনঃস্থাপনে সহায়তা করতে অতীতের ভুলগুলো ক্ষমা করার ও ভুলে যাওয়ার আবেদন জানিয়েছেন। একইভাবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীও ‘৭১ সালে বাংলাদেশে যে হত্যাযজ্ঞ, লুণ্ঠন হয়েছে তা ভুলে জনগণকে নতুন করে যাত্রা শুরু করার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, দেখাতে হবে বাংলাদেশের জনগণ ক্ষমা করে দিতে জানে।’

আমাদের সময়-এর সঙ্গে একানত্ম আলাপে আলমগীর বাবর আরও বলেন, পাকিসত্মানের বর্তমান প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফও এ ইসু্যত দুঃখ প্রকাশ করেছেন। বাবর বলেন, পাকিসত্মান ও বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক খুবই গভীর। বাংলাদেশের সিংহভাগ মানুষ পাকিসত্মানকে বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবে দেখে। অত্যনত্ম ক্ষুদ্র একটি অংশ তাদের নিজেদের ‘রুটির স্বার্থে’ দু’দেশের মধ্যে বিদ্বেষ সৃষ্টির চেষ্টা করে। বাবর দাবি করেন, তার প্রায় তিন বছরের দায়িত্বকালে তিনি বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দল

ও গোষ্ঠির প্রতি সমান দৃষ্টিভঙ্গি প্রদর্শনের মাধ্যমে দু’দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে ইতিবাচক মাত্রা দিতে চেয়েছেন। পাকিসত্মান বাংলাদেশের অভ্যনত্মরীণ বিষয়ে কখনো নাক গলায়নি, ভবিষ্যতেও গলাবে না। বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিসত্মানের সম্পর্ক সব সময়ই বিশেষ মাত্রার, সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই। ইসলামাবাদে পিপিপির নেতৃত্বাধীন নতুন সরকার প্রতিষ্ঠিত হলেও পাকিসত্মানের বাংলাদেশ-নীতি আগের মতোই আছে।

বাবর বলেন, তার দায়িত্বকালে দু’দেশের মধ্যকার যৌথ অর্থনৈতিক কমিশন পুনরুজ্জীবিত হয়েছে, যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ কাজ করছে। বেসরকারি ক্ষেত্রে দু’দেশের ফেডারেশনই জয়েন্ট বিজনেস কাউন্সিল গঠন করেছে। দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য বেড়েছে, বিনিয়োগ হয়েছে ১শ’ মিলিয়ন ডলার এবং পাইপ লাইনে আরো আছে। বাংলাদেশের নারী উদ্যোক্তাদের উৎসাহ দিতে ঢাকায় প্রতি বছর দু’দেশের উদ্যোক্তাদের নিয়ে প্রদর্শনী হচ্ছে। আগামী জুনে ‘আমার করাচি’ ট্রেড শোতে যাচ্ছেন বাংলাদেশের ১২ জন ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তা।

সার্কের বাইরেও পাকিসত্মান বাংলাদেশের ছাত্রদের জন্য মেডিক্যাল, ইঞ্জিনিয়ারিং, আইটিসহ ১০০টি বৃত্তির ব্যবস্থা করেছে, যার ৬৫টি বাসত্মবায়িত হয়েছে। পাকিসত্মান বাংলাদেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার ল্যাব প্রতিষ্ঠা করে দিচ্ছে। গত ২ বছরে ২০টি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। আবেদনপত্র বিবেচনা করে আরও ৬টি করা হবে। প্রতিবন্ধীদের জন্যও পাকিসত্মান হাইকমিশন কাজ করছে। বিভিন্ন হাসপাতাল ও জেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রকে ৭টি অ্যাম্বুলেন্স দেওয়া হয়েছে। ঢাকা ডেন্টাল হাসপাতাল, ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালসহ অনেক প্রতিষ্ঠানকে চিকিৎসা সরঞ্জাম দেওয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়-সিডর আক্রানত্মদের জন্য পাকিসত্মান ৩ হাজার টন চাল পাঠিয়েছে। আরও ২ হাজার ৬শ’ টন আসছে।

পাকিসত্মানের বর্তমান সামরিক কতর্ৃপক্ষ রাজনীতিতে হসত্মক্ষেপ করবে না বলে ঘোষণা করেছে। আলমগীর বাবর আশাবাদী যে, গণতন্ত্রের নবযাত্রায় পাকিসত্মান এগিয়ে যাবে। ধর্মীয় উগ্রবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠির সঙ্গে বিরোধ নিরসন প্রশ্নে আলোচনা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন কর্মসূচি গ্রহণ, শিক্ষা বিসত্মার, প্রয়োজনে সামরিক শক্তি প্রয়োগের যে নীতি পাক সরকার নিয়েছে তাও সফল হবে বলে আশা করেন পাকিসত্মানের হাইকমিশনার। সম্পাদনা : আতা

original source[1] | link posted by Anim Anamika

Endnotes:
  1. original source: http://amadershomoy.com/online/news.php?id=14217&sys=1

Source URL: https://priyoaustralia.com.au/readers-link/2008/a%c2%a6%c2%8fa%c2%a6%e2%80%a2a%c2%a6%c2%bea%c2%a6%c2%a4a%c2%a7%c2%8da%c2%a6%c2%a4a%c2%a6-a%c2%a6%c2%aaa%c2%a7%c2%8da%c2%a6a%c2%a6%c2%b6a%c2%a7%c2%8da%c2%a6%c2%a8a%c2%a7%e2%80%a1-a%c2%a6/