by Dr Naila Aziz Meeta | June 9, 2011 1:34 am
ক্লান্তি আমার ক্ষমা কর প্রভু…..……
বন্যার সময়ের কিছু অভিগ্গতা…….
বেশ কদিন যাবৎ কুউইণ্সল্যান্ডের বিভিন্ন জায়গায় বন্যা…প্রথমে হোল রকহ্যামটন,তারপর টুম্বা আর তারপর?
কয়েকদিন ধরেই বন্যা চারিদিকে কিন্তু পাত্তা দিচ্ছিলামনা,ভাবছিলাম,এ আর নতুন কি? থাকিইতো বন্যার দেশে,যখনি বিদেশীরা শোনে আমরা বাংলাদেশি, সাথে সাথে উত্তর, “উহ,দ্যাট ফ্লাডেড কান্ট্রি??” অনেকবার এদের বোঝানোর চেষ্টা করসি, “ম্যান,দ্যাটস নট আওয়ার রিয়েল পিকচার” কিন্তু কার কথা কে শোনে? যাই হোক,আমি সেই বন্যাদেশের মেয়ে হয়ে বন্যাকে ভয় পাব? কখনোই না!! তাই স্বাভাবিক জীবনযাত্রা নিয়ে ব্যস্ত……কিন্তু আমরা যখন অন্যদের কোন সমস্যা দেখি তখন কেন যে ভাবিনা যে এটা আমার ক্ষেত্তেও হতে পারে!!
বৃষ্টি থামার কোন লক্ষণ নাই,কিন্তু ইউনি যাওয়া খুবি দরকার…..১১ তারিখ মন্গলবার সকালে ঠিক করলাম ইউনি যাব,এসাইণমেন্টের ব্যাপারে টিচারের সাথে কথা বলা দরকার,তাছাড়া আগেরটার রেজাল্টও পাচ্ছিনা…..ভোরে রওনা দিলাম,আমি আর মেয়ে একসাথে,বাসে,..ও নামবে গ্রিফিথে আর আমি হার্সটন। যাবার পথে রাস্তার অবস্থা বেশি সুবিধার মনে হোলনা,বৃষ্টিতে অনেক যায়গাই পানি জমা,মানুষের ভিড় ইত্যাদি…পাত্তা দিলামনা..
আনিকা নেমে যাবার পর আমি নামলাম,দুজনেরি বাস বদল করতে হবে…….বাসা থেকে প্রায় ২ ঘন্টা লাগে পৌছাতে…….পৌছানোর পর দেখি,টিচার ব্যস্ত.. তাই দেখে কম্পিউটার রুমে ঢু দিলাম,দেখি কয়েকজন উপুর হয়ে এসাইণমেন্ট নিয়ে ব্যস্ত,আমিও সময় ন্ষ্ট না করে লেগে গেলাম কাজে,কাজের ফাকে ব্ল্যাকবোর্ড চেক করে প্রতিক্ষিত রেসাল্টটি পেলাম…………
১১টার দিকে যেই টিচারকে একটু ফ্রি পেয়ে কথা বলা শুরু করসি,হটাৎ আনিকার কল,”আম্মু,শিগ্গীর বাসায় যাও,ভীষণ খারাপ অবস্থা,সব বন্ধ করে দিচ্ছে ইউনি ,অফিস…টুম্বার বন্যার পানি এখন ব্রিজবেনে,ব্রিজবেন রিভারে ড্যাম এ্যটাক করছে,শহর তলায় যাচ্ছে পানির নিচে!
আবহাওয়া দেখেই আন্দাজ করছিলাম,সাংঘাতিক কিছু একটা হবে,মেয়েকে বল্লাম,”তুমি কিভাবে বাসায় যাবে?”ও বল্ল আমাকে বাস স্ট্যান্ডে যেতে,ও ওদিক থেকে আসছে…..তবে বাস পাব কিনা সন্দেহ..সব ট্রান্সপোর্ট বন্ধ!br />
ভীষন টেনশনে পড়ে গেলাম,আমার চেয়ে বেশি মেয়েকে নিয়ে…..কিভাবে ফিরবে এতটা দূর! টিচারটা এতো ভাল! আমাকে শান্তনা দিয়ে,হাতে ১ টা ছাতা ধরিয়ে দিয়ে বল্ল চিন্তা না করতে,বাস পাব (ছাতাও আনিনি,বল্লামনা,পাত্তা দেইনি)….তারপর প্রথম বাস স্ট্যান্ডে ২ ঘন্টা দাড়ানোর পর ১ বাসে একটু যায়গা পেলাম,,সিটির লোকজনকে ইভাকুয়েট করছে….বাচ্চাদের আগে…তাই সব বাস ভর্তি!!br />
এত্ত ভিড় যে বাস স্ট্যান্ডে দাড়ানোর যায়গা নাই! মানুষ সব রাস্তায়!!অপেক্ষা করতে করতে অস্থির ঠিক এই সময় খবর পেয়ে আমার কর্তাবাবু ঢাকা থেকে কল দিয়ে “কোথায় তোমরা,কি ব্যাপার?বাইরে কেন?আনিকা কই?দুনিয়ার প্রশ্ন! জানোনা,আবহাওয়ার অবস্থা?বাইরে গেসো কেনো?”কি আর বলব,যদিও জানতাম,আবহাওয়া খারাপ তাও মিথ্যা বল্লাম,”জানতামনা,এমনটা হবে” (আসলে পাত্তা দেইনি বন্যাকে,আগেই বলেছি সেটা)…
আমার কথা শুনে ও আরো ক্ষেপে গেল,”তা জানবা কেন? নিউস দেখলেতো !! সারাদিনতো শুধু হিন্দি সিরিয়াল দেখ!আমি এখানে বসে জানি আর তোমরা খবর রাখনা!!”আমিতো অবাক,একটা মাত্র হিন্দি সিরিয়াল দেখি,(কালি,তাও মাঝে মাঝে) সেই জন্য এই সময় আমাকে এসব কথা! এই বৃষ্টিতে হাজার হাজার মানুষের মাঝে দাড়িয়ে এসব কথা শুনতে কেমন লাগে! তারউপর ছাতাও ব্যবহার করতে পারছিনা,অন্যান্যদের মাথায় খোচা লাগে তাই! রাগের চোটে ফোন রেখে দিলাম (পরে বুঝছি ও কতটা টেন্সড হয়ে ছিল আমাদের নিয়ে!)/#
যাই হোক,অবশেষে ৪ ঘন্টা অপেক্ষা করার পর ২য় বাস স্ট্যান্ডে ড্রাইভারের পাশে এক ফোটা যায়গা পেলাম দাড়ানোর,যাক বাবা,বাড়ি ফিরছি তাহলে আনিকাকে আগের বাসে একটু যায়গা করে উঠিয়ে দিসি,কিন্তু কিছুটা যাবার পর দেখি রাস্তা পানির নিচে,বাস আর যাবেনা …পরে এক বন্ধু গাড়ি নিয়ে এসে আমাদের উদ্ধার করল,দুজনেই বাসায় পৌছালাম সন্ধায়…
এবার? রাস্তাতেই মনে মনে গুছিয়ে নিয়েছিলাম পরবর্তি প্ল্যান..অনেক কাজ, ব্রিজবেনে বন্যা! আমি একা আমার মেয়েকে নিয়ে.!!.কোন পথে আগাবো? প্যানিক হলে চলবেনা..তাই ছুটলাম দোকানে,১ম কাজ,খাবার কেনো,অসুধ কেনো,আর পানি জমাও….বন্যার পর পানি ক্লোরিনেটেড হয়ে যায়,আর সাপ্লাইও কমে আসে….:#
উলিতে গি্য়েতো আমার চোখ কপালে! ব্রিজবেনে এত মানুষ থাকে! সময় নাই,দিলাম দৌড়,আগে পাউড়ুটি কিনব……ওমা,রয়াক খালি,১টাও নাই! দিলাম দৌড় দুধের ওখানে….নাই!! একে একে ডিম,আলু আরো যাই খুজি কিছুই নাই! শেষে যা পাইসি তাই নিয়ে বাসায় ফিরলাম..ততক্ষনে সিটি পানির নিচে….! কিছুক্ষণ টিভি দেখার পর বুঝলাম, সামনে দিন আসছে,কারেন্ট থাকবেনা,খাবার রান্না করে রাখতে হবে….শুরু হোল রান্না বান্না,তাড়াতাড়ি শেষ করতে হবে,কারেন্ট থাকবেনা….খাওয়ার পানি জমাতে হবে,দোকানে পানি পাইনি..
রাত বাড়ছে,ভয় বাড়ছে…..টিভি দেখছি,ইন্টারনেটে জানছি..কাছাকাছি এলাকা গুলি পানির নিচে…লোকজনের কি চিৎকার! স্বজন হাড়ানো,হাড়ানো নিজের বাড়িঘর,জিনিষপত্র,জীবনের কোন নিশ্চয়তা নাই…..একেই তালে বন্যা বলে! দেখেছি অনেক কিন্তু নিজেতো কোন দিন এমন বিপদে পড়িনাই! সারারাত দুচোখ জানালায়,পর্দা সরিয়ে দেখছি,পানি কি এল? যদিও আমার বাড়ি অনেক উচুতে,তবুও কাছাকাছি এলাকায়,রাস্তায় পানি….তাই এত ভয়,তাছাড়া সুনামীর আবার কোন সময়/কারন আছে নাকি?
অবশেষে সকালে একসময় অনুভব করলাম বেচে আছি, কিন্তু এত খুশির কিছু নাই….আসলটা আসছে আজ আর কাল….খবরে বল্ল আসছে ২ দিন ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ বন্যা হবার সম্ভাবনা,যেটা পুরা ব্রিজবেনকে ডুবাবে! ব্রিজবেন রিভারের ড্যাম ভেন্গে এরকমটা হবে!! বিভিন্ন যায়গা থেকে মানুষ ছুটলো আশ্রয় কেন্দ্রে,দোকানে,কিন্তু এ কি অবস্থা?? খাবার নাই,মোমবাতি/ম্যাচ,টর্চ,অষুধ সব শেষ…..কি করব আমি? কারেন্ট ছাড়া টেলিফোন,ইন্টারনেট,চুলা কাজ করেনা,মোবাইলে চার্জ থাকেনা…কেও কেও বল্ল বাসা থেকে বের হয়ে তাদের সাথে যেয়ে থাকতে……….
কিন্তু গেলামনা কোথাও..মনে মনে বিশ্বাস, কিছু হবেনা ইনশাল্লাহ….কিন্তু বিকেলের দিকে খবর পেলাম বাড়ির সামনে রাস্তায় পানি…..এখনো সময় আছে,সরে যাও,সবার উপদেশ…ঠিক করলাম,ঘাউরামি করা ঠিক না,মেয়েটাকে বিপদে ফেলতে চাইনা,কিন্তু কই যাব? ঠিক আছে,সানিব্যাংক হিল্স উচু যায়গা,আমার বন্ধুর বাসা,শুরু করলাম,প্যাকিং…প্রয়োজনিয় জিনিসপত্র শুধু……হায়রে সাধের বাড়ি,ঘর,শাড়ি–গয়না..কিইনা করি আমরা এসবের জন্য…কি লাভ? এইতো সব ফেলে যেতে হচ্ছে…..
রওনা দেবার সময় আর এক যন্ত্রনা,গাড়ি স্টার্ট নিচ্ছেনা….কিছুতেই হোলনা,প্রতিবেশী ছেলেটা “জন” দেখে বল্ল ইন্জিন বদলাতে হবে. যেটা এখন কোন ভাবেই সম্ভব না….কি আর করব,যাওয়া ক্যানসেল….কিন্তু কিভাবে পরিস্থিতি মোকাবেলা করব? দেখি টিভিতে কি বলে আর এরা কি করছে,সমস্যা আমার একটাই,যদি পানি আসে!..দেখলাম,অনেকে ঘরের ছাদে আশ্রয় নিসে,আরে তাইতো! কিন্তু ছাদে কি করে উঠে…এটাতো কোন দিন জানিনা বা চিন্তাও করিনাই…
অত:পর বৃষ্টির ভেতর বাইরে দাড়িয়ে ছাদে উঠার রাস্তা খুজছি,হটাৎ দেখি “জন” এগিয়ে এল (আমাকে হয়তো পাগলই ভাবসে) কি করি জানার পর দেখিয়ে দিল ছাদে কই দিয়ে উঠতে হয়…..গ্যড়াজের ছাদে একটা ৪ কোনা জায়গা আলগা অংশ দিয়ে ঢাকা,আস্তে চাপ দিলেই সরে যায়…ও চলে যাবার পর ১ টা ল্যাডার এনে দেখি আমার হাত যায় ওখানে কিন্তু উঠতে পারবোনা,মনে মনে ভেবে রাখলাম,থাক,আমার ওঠা লাগবেনা,আনিকাকে ধাক্কা মেরে উঠায় দিতে পারব..
এবার শুরু হোল অপেক্ষার পালা…আস্তে আস্তে রাত বাড়ছে,কি হতে যাচ্ছে এই অনুভূতি আমি কাওকে বোঝাতে পারবোনা,শুধু বলব ঐ সময় আমার সবচেয়ে বেশী দরকার ছিল এমন একজন মানুষের যে আমার সাথে একটু সেয়ার করতে পারবে…..আনিকার সামনে খুব ঠান্ডা ছিলাম আমি…..কিন্তু ভেতরে ভেতরে শেষ হয়ে যাচ্ছিলাম! একসময় মনে হল ঘুমের অষুধ খেয়ে ঘুমায় থাকি,পানি ঢুকলে ঘুমন্ত অবস্থায় ভেসে যাব….কিন্তু আনিকার জন্য সেই চিন্তাও বাদ দিলাম…
উফ! কি করি,পাগল হয়ে যাব আমি.আর যে পারিনা……মারা যাচ্ছি আমি? ঐ যে বাংলাদেশে টিভিতে দেখতাম বন্যায় ডোবা ফোলা ফোলা লাশ গুলি,আমি অমন হব? উফ! কি ভয়ন্কর!কি কষ্ট!মাফ কর খোদা,মাফ কর…..
ওদিকে টিভিতে দেখাচ্ছে…..”ভয়ন্কর টাইডাল কিন্গ” কিভাবে আগাচ্ছে! নাহ্,এভাবে আর ভাববোনা,সুমন(ছোট ভাইটা) বলেছে আজ,”প্যানিককে যত প্রশ্রয় দেবে ও তোমাকে তত পেয়ে বসবে”,রানা(আর এক ভাই আমার) ফ্লোরিডার ক্যাট্রিনার শিকার হয়ে কিভাবে নিজেকে ম্যানেজ করেছিল….এসব ভাবনা মনকে অন্য দিকে নিয়ে গেলো….দেখতে ইচ্ছা হোল অনেক প্রিয়জনের মুখ….কবে দেখবো? আদৌকি দেখবো ?
আবার এসব ভাব্না নাহ, আর না….হটাৎ একটা কথা মনে করে হাসতে হাসতে লুটিয়ে পড়লাম,কাল আসেফ বলেছে,”শোন্,ঠিক যখন পানিটা আসবে আর বুঝবি মারা যাচ্ছিস,দোয়া পড়তে ভুলিসনা কিন্তু…আর গরম কাপড় পড়ে রাখিস আগে আগে,ঠান্ডা লাগবে পানিতে..”আরও কিছু মজার মজার কথা….অনেকক্ষণ হাসার পর আনিকাকেও বল্লাম কথাগুলি.. আনিকাও প্রানভরে হাসলো কিছুক্ষণ….আসেফকে প্রানভরে দোয়া করলাম,দুরে, কাছে যেখানেই থাকুক না কেন….মানুষকে খুশি করার,আর তার মন ভাল করার কি বিশাল শক্তি ওর!!
আরে,সকাল হয়ে গেছে!আমরা বেচে আছি! সব ঠিকঠাক!! টিভিতে তখন বলছে,নদীর পানি যতটা বাড়ার কথা ছিল ততটা বাড়েনি আর রাজা সাহেব মানে টাইডাল কিন্গ আসেনি..উফ,খোদা,হাজারো শুকুর তোমাকে…..ফজরের নামাজের সাথে ২ রাকাত নফল নামাজ পড়ে আল্লাহ্র দরবারে হাজার শুকুর করলাম….
কদিন যাবৎ দেশে বিদেশে সবাই অস্থির,ফোনের পর ফোন,ফেসবুক,মোবাইল,আজো ভোর ৪ টায় প্রথম কল আব্বা…মন ভরা প্রশান্তি নিয়ে কথা বল্লাম…আব্বা,আম্মা প্রথমেই বল্লেন,”আমি জানতাম মা,দোয়া করছিনা!”
সারাদিনের কল করা মানুষ গুলির ভেতর একজনের কথা না বল্লেই না,…আসেফ !! কল দিয়ে বল্ল,’ইস,তুই বেচে আছিস? ভাবছিলাম বস্ আসলে একটা দারুন খাওয়া পাব,দুর,তোর কুলখানির খাওয়াটা মিস হয়ে গেল”……….
বন্যা পরবর্তী…….
খুবই করুণ অবস্থায় পরেছে এখানে মানুষ, অসহায়ের মত বাড়ি ঘর হারিয়ে কি অবস্থা! এক জনের চোখের সামনে দিয়ে আরেক জন স্রোতের টানে ভেসে গিয়ে মারা গেছে। এ রকম করুন কাহিনী শুনে নিজেকে সত্যিই খুবই ভাগ্যমান মনে হয়েছে।
অনেক কাজ এখন সামনে,বিপদ পুরাপুরি কাটেনি….তাছাড়া ভুলে গেলে চলবেনা,আজ যারা সর্বশান্ত হয়ে পথে পথে ঘুরছে,আমিও তাদের মাঝে থাকতে পারতাম..তাই,যে যেভাবে পারি ওদের সেবায় এগিয়ে যেতে হবে….আমি এরই ভেতর শুরু করে দিয়েছি “ডোনেশন কালেকশন”আর মেয়ে যোগ দিয়েছে ভোলেন্টিয়ার হিসেবে বিভিন্ন অরগানাইগেশনে… সবাই মিলে নেমে এসেছে পরিস্কারের কাজে। আমরাও যোগ দিয়েছি।
খুব অবাক লাগে অস্ট্রেলিয়ানদের মানবতা বোধ দেখলে,যারা সর্বশান্ত হয়েছে তাদেরকে যেভাবে রাখা হয়েছে ভাবা যায়না।”ইভাকুয়েশন সেন্টারকে” মনে হয় “রিক্রিয়েশন সেন্টার”! একদিকে যেমন শিশুদের খেলনা সামোগ্রি অপরদিকে বয়োস্কদের বিনোদনের ব্যবষ্থা……
ক্লিনিং এর কাজ শুরু হয়েছে গত প্রথম দিন থেকেই, সব করছে জনগন,কাউকেই কিছু বলতে হচ্ছেনা, এমন ভাবে করছে যেন নিজের বাড়ি কাজ! রাস্তায় রাস্তায় শিশুরা ব্যনার নিয়ে দাড়িয়ে আর পাশ্বে বাবা,মায়েরা ফ্রি বার্বিকিউ খাওয়াচ্ছে…….
আজ গিয়ে দেখি।রাস্তায় পুলিশ নেমেছে শুধুমাত্র ভলেন্টিয়ারদের কন্ট্রোল করতে! এক ডেভেলোপার বলেছে ঘর বাড়ি হারানো এমন যারা আছে ইনসুরেন্স ছাড়া….. তাদের সবার বাড়ি,ঘর ফ্রি করে দেবে।
জুতা,স্যান্ডেল,চিরুনি,ব্যান্ড সব জিনিষ আসছে হাজার হাজার..সব দিচ্ছে জনগন……..কয়েকদিন পর্যন্ত গভট এর কিছু কিনতে হয়নি ! ৫০ মিলিয়ন ডলার জমা হয়েছে ১ম দিনেই!!
এখানকার মানুষের ডেডিকেশন আলাদা. মানুষ অন্য স্টেট থেকে চলে আসছে বন্যার ময়লা সরাতে। কেউই সরকারের উপর নির্ভরশীল না।
বন্যার সময়ের কিছু অভিগ্গতা, যা এখানে তুলে ধরলাম, অনেক কিছু জেনেছি, শিখেছি—সর্বোপরী পরস্পরের প্রতি পরস্পরের যে মানবতা বোধ, সহযোগিতা সেসব দেখার মত !
যারা ভাল আছে, বিপদমুক্ত আছে, তারা যেভাবে সাহায্য করছে তা চিন্তা করা যায়না। কেও খাবার দিয়ে, থাকার যায়গা দিয়ে, কেও আবার ব্যবহার সামগ্রী দিয়ে ! মানসিক সাপোর্ট দিতেও এরা পিছপা ছিলনা !!
Source URL: https://priyoaustralia.com.au/community-news/brisbane-news/2011/klanti-amar-khama-koro-probhu-late-post/
Copyright ©2024 PriyoAustralia.com.au unless otherwise noted.