নিউজিল্যাল্ডের বিরুদ্ধে ম্যাচ বাংলাদেশের

by Fazlul Bari | March 12, 2015 4:30 am

বৃষ্টি অভ্যর্থনা করেছে হ্যামিল্টনে! বৃহস্পতিবার অকল্যান্ড থেকে সড়কে হ্যামিল্টন আসার পথে ঝড়ি বৃষ্টি দেখে দেখে আসতে হয়েছে। শহরটায় পৌঁছার পরও চলছিল ইলশে গুঁড়ি বৃষ্টি! থামার যেন নাম নেই! অথচ এই শহরেই শুক্রবার হবে অন্যতম আয়োজক নিউজিল্যাল্ডের বিরুদ্ধে ম্যাচ বাংলাদেশের। বৃষ্টির কারনে আরেক আয়োজক অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের ম্যাচ হতে পারেনি ব্রিসবেনে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আয়োজকদের ম্যাচ হলেই কী তা ভালোবাসে বৃষ্টি! তবে আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে শুক্রবার ম্যাচের সময়ে রোদেলা দিন থাকবে হ্যামিল্টনে। যদিও এই বৃষ্টি ধকল রেখে গেলো শুক্রবারের ম্যাচের শরীরে! বৃহস্পতিবার বৃষ্টির মধ্যে সেডন পার্কে অনুশীলন করেছে বাংলাদেশ দল। আর বৃষ্টিতে নিউজিল্যান্ড দল খোলা মাঠে অনুশীলন করতেই পারেনি।

বৃহস্পতিবার হ্যামিল্টন পৌঁছে বিশ্বকাপের আঁচ বেশ টের পাওয়া যায়। পথে পথে ব্যানার-ফেস্টুন। দোকানে দোকানে ঝুলানো বিশ্বকাপের দলগুলোর ছোট ছোট পতাকা। সিটি সেন্টারের কাছের হোটেলের সামনের রাস্তায় পাশে ঝুলানো পাশাপাশি ঢাউশ দুটি পতাকা বাংলাদেশের আর নিউজিল্যান্ডের। সে দুটির জমজ ছবি তুলতে গিয়ে বৃষ্টিতে ভিজে থাকা পথের ছবিই উজ্জ্বল ভাসে। ছোট শহর হ্যামিল্টন। নিউজিল্যান্ডের আরও সব শহরের মতো এটিও ছবির মতো সাজানো সুন্দর। অবয়বে ছোট মনে হলেও এটি চতুর্থ বৃহত্তম শহর নিউজিল্যান্ডের। দেশটির সাবেক এক প্রধানমন্ত্রী রিচার্ড জন হ্যামিল্টনের নামে এর ক্রিকেট গ্রাউন্ড সেডন পার্ক। এই ক্রিকেট গ্রাউন্ডটি অবশ্য বিশেষ পরিচিত নিউজিল্যান্ড প্রবাসী বাংলাদেশিদের। কারন ২০০৭ সালে এখানে এক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ বাংলাদেশ জিতেছিল। অবশ্য বাংলাদেশের সিডর দূর্গতদের সাহায্যের জন্যে অনুষ্ঠিত ফ্রেন্ডলি ম্যাচ হওয়াতে সে ম্যাচের কথা ক্রিকেট রেকর্ড়বুকে নেই। নিউজিল্যান্ডের জাতীয় দলও সে ম্যাচে খেলেনি।

রেকর্ডবুকে যাই থাকুক এ নিয়ে মাথাব্যথা নেই নিউজিল্যান্ড প্রবাসী বাংলাদেশিদের। কারন আগের টানা ৭ ম্যাচ বাংলাদেশ হারিয়েছে নিউজিল্যান্ডকে। এবারের বিশ্বকাপে চোখে পড়ার মতো ফর্মে থাকা বাংলাদেশ দল এক ল্যান্ডকে(ইংল্যান্ড) এডিলেইডে পরাভূত করার পর আরেক ল্যান্ডকে ( নিউজিল্যান্ড) তারা হারাতে এসেছে! এমনিতে হ্যামিল্টন প্রবাসী বাংলাদেশিদের সংখ্যা ৮-১০ পরিবারের বেশি হবেনা। মাঠের বাংলাদেশ সমর্থকগোষ্ঠীদের গ্যালারি ভরাতে ভরসা অকল্যান্ড প্রবাসী বাংলাদেশিরা। অকল্যান্ডে সেই প্রবাসী বাংলাদেশি পরিবারের সংখ্যাও ৩, সাড়ে ৩ শ পরিবারের মধ্যে। প্রবাসী ছাত্রদের সংখ্যাও ৫-৬ শ’র বেশি নয়। প্রায় দু’ঘন্টার ড্রাইভে গাড়ি হাঁকিয়ে তারা দলে দলে সেডন পার্ক মাতাতে আসবেন সে অপেক্ষা সবার।

অকল্যান্ড প্রবাসী প্রকৌশলী শফিকুল রহমান ভূঁইয়া অনু জানালেন তাদের অনেকে দু’তিন মাস আগে টিকেট কিনেছেন। বাংলাদেশ দলের জার্সি, জাতীয় পতাকা আনিয়েছেন দেশ থেকে। খেলাটা নিয়ে তাদের এমন অনেক প্রস্তুতি। খেলার আগে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্যেও বিশেষ প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানটি খেলার আগে হবে সেডন পার্কের ফান জোনে। গাড়িতে লাল সবুজ পতাকা লাগিয়ে অকল্যান্ড থেকে আসবে বাংলাদেশিদের গাড়ির বহর। বহরে থাকবে ৪ টি বাস ও শতাধিক গাড়ি। খেলা উপলক্ষে অনেকের আত্মীয়স্বজন বন্ধুবান্ধবও দেশ থেকে এসেছেন। সে কারনে দেশের দলের খেলাটি নানাভাবে প্রবাসী পরিবারগুলোকে নাড়া দিয়েছে। তবে এ খেলাকে কেন্দ্র করে তাদের আরেক আক্ষেপের কথাও বলেছেন প্রকৌশলী অনু। তাহলো এ খেলা দেখতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসার কথা ছিল। প্রথমে বিসিবির পক্ষে প্রধানমন্ত্রীকে নিরুৎসাহিত করা হয়। এরপরও খেলোয়াড়দের উৎসাহিত করতে প্রধানমন্ত্রী আসতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বাংলাদেশের কূটনৈতিক ব্যর্থতায় তা করা যায়নি। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ব্যবসায়ীদের একটি দল আসার কথা ছিল। কিন্তু এরজন্যে নিউজিল্যান্ডের চেম্বার সহ সংশ্নিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে আগাম গ্রাউন্ডওয়ার্ক সহ কোন কাজই ঠিকমতো করতে পারেনি অস্ট্রেলিয়ার বাংলাদেশ হাইকমিশন ও নিউজিল্যান্ডস্থ বাংলাদেশের অনারারি কন্সাল জেনারেল। সে কারনে প্রধানমন্ত্রীর প্রোগ্রাম বাতিল হওয়ায় তারা হতাশ। প্রবাসী এই প্রকৌশলীর মতে প্রধানমন্ত্রী আসলে অন্য চেহারা নিতো সেডন পার্ক। অস্ট্রেলিয়া সহ আশেপাশের দেশগুলো থেকেও তখন প্রবাসীরা আসতেন।

Source URL: https://priyoaustralia.com.au/articles/sports/2015/%e0%a6%a8%e0%a6%bf%e0%a6%89%e0%a6%9c%e0%a6%bf%e0%a6%b2%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%b2%e0%a7%8d%e0%a6%a1%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%b0%e0%a7%81%e0%a6%a6%e0%a7%8d%e0%a6%a7%e0%a7%87/