সিডনিবাসী বাংলাদেশীদের সাথে শিকড়ের সেতুবন্ধন

by Priyo Australia | June 14, 2016 11:20 pm

“বিশ্বায়নে শহীদ মিনার”

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তর সুফিয়া কামাল জাতীয় গ্রন্থাগারসহ প্রত্যেকটি জেলার সরকারী লাইব্রেরীসমূহে সিডনিতে প্রতিষ্ঠিত পৃথিবীর প্রথম “আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্মৃতিসৌধ”-এর মুখ্য রূপকার ও বাস্তবায়নকারী কমিটির সমন্বায়ক, এবং মাদার ল্যাঙ্গুয়েজেস কনসারভেশন মুভমেন্ট ইন্টারন্যাশনাল ইনক-এর প্রতিষ্ঠাতা মি নির্মল পাল’এর লেখা “বিশ্বায়নে শহীদ মিনার” গ্রন্থটি ‘টেক্সট এবং রেফারেন্স’ ক্যাটাগরিতে সংরক্ষণ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। তাছাড়াও ঢাকাস্থ বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র গ্রন্থটির ৫৫ কপি সরবরাহের জন্য গ্রন্থটির প্রকাশককে লিখিতভাবে অনুরোধ করেছেন। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তরের এই সিদ্ধান্তের ফলে পবিত্র মাতৃভূমির সাথে প্রবাসে আমাদের জাতীয় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি চর্চা ও লালন পালনের উভয়মুখী সেতুবন্ধনের নতুন অধ্যায়ের সুচনা হল। এর ফলে অস্ট্রেলিয়াবাসী বাংলাদেশীদের গর্বিত অর্জন তথা বাঙালিদের পবিত্র একুশের চেতনায় পৃথিবীর সকল মাতৃভাষা সংরক্ষণে যে বিশেষ প্রভাব রাখতে পারে তার প্রস্তাবিত কৌশল সম্প্রসারণে বিশেষ কার্যকরী ভূমিকা রাখবে। উল্লেখ্য, গ্রন্থটির কপি ইতিমধ্যে নিউ ইয়র্কের কুইন্স লাইব্রেরী, বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় গণগ্রন্থাগার, বাংলা একাডেমী, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সটিটিউট, কলিকাতা কেন্দ্রীয় লাইব্রেরী এবং এসফিল্ড লাইব্রেরিতে সংরক্ষিত হয়েছে।

পৃথিবীর মাতৃভাষা সমূহের ক্রমক্ষয়িষ্ণুধারা সম্পর্কে সকল ভাষাভাষীকে অবহিত করা এবং এইধারা প্রতিরোধে উৎসাহিত করার লক্ষে বিশ্বব্যাপী প্রতিবছর বাংলার মহান একুশে ফেব্রুয়ারিকেই “আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস” হিসেবে উদযাপনের সিদ্ধান্তকে আরও কার্যকরী ও বেগবান করার লক্ষে “কনসারভ ইউর মাদার ল্যাংগুয়েজ”কে সকল ভাষাভাষীর ক্ষেত্রেই সার্বজনীন বার্তা হিসেবে জনপ্রিয় ও গনজাগরণ সৃষ্টি করার মাধ্যমে ইউনেস্কোর নেতৃত্বে বাঙালিদের সক্রিয় সহযোগিতায় “মাতৃভাষার বিশ্বপরিবার” গঠনের সুনির্দিষ্ট বৈশ্বিক কৌশল উপস্থাপনাই এই গ্রন্থটির আকর্ষণীয় দিক। দুইভাগে বিভক্ত গ্রন্থটির প্রথম অংশে বাংলা ভাষা আন্দোলনের জানা-অজানা তাৎপর্যপূর্ণ ঐতিহাসিক খুঁটিনাটি তথ্য, প্রেক্ষাপট, স্বাধীনতা আন্দোলন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে একুশে’র স্বীকৃতির ইতিহাস এবং সিডনিতে প্রতিষ্ঠিত পৃথিবীর প্রথম “আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্মৃতিসৌধ”-এর বৈশ্বিক দর্শন ও নকশার প্রেক্ষাপট, বাস্তবায়ন কৌশল এবং বাস্তবায়নের তথ্যনির্ভর বিষয়াদি উদ্ধৃত হয়েছে।

দ্বিতীয় অংশে “মাদার ল্যাঙ্গুয়েজেস কনসারভেশন মুভমেন্ট ইন্টারন্যাশনাল ইনক-এর প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপট, উদ্দেশ্য এবং বিশ্বের সকল মাতৃভাষা সংরক্ষণের বাস্তবধর্মী কর্মসূচীর সুনির্দিষ্ট রূপরেখা প্রণীত হয়েছে। বাস্তবায়ন কৌশল হিসেবে প্রত্যেক লাইব্রেরীতে “একুশে কর্নার” প্রতিষ্ঠার দর্শনের প্রবর্তন, রাষ্ট্রপুঞ্জের সকল সদস্যদেশে মাতৃভাষা সংরক্ষণের নীতিমালা গ্রহণসহ সকল ভাষাভাষীর সমন্বিত “মাতৃভাষার বিশ্বপরিবার” গঠনের সুনির্দিষ্ট বৈশ্বিক রূপরেখা দুটি ফ্লো চার্টের মাধ্যমে উপস্থাপিত হয়েছে। গ্রন্থটির শেষে সর্বমোট ৬১টি প্রামান্য ছবিসহ, একটি একুশে কর্নার পোষ্টার এবং ২৭টি ডকুমেন্টের কপির আংশিক সংযোজন গ্রন্থটিকে একাধারে একটি ঐতিহাসিক তথ্যনির্ভর, গবেষণা ভিত্তিক প্রামান্য দলিল এবং মাতৃভাষা সংরক্ষণে বৈশ্বিক সমন্বিত প্রকল্প প্রস্তাব হিসেবে বিবেচনার দাবি রাখে। বিশেষভাবে উল্লেখ্য, এমিটেরাস প্রফেসর আনিসুজ্জামান (একুশে, স্বাধীনতা ও পদ্মভূষণ পদকে সম্মানিত), প্রফেসর যতীন সরকার (একুশে, স্বাধীনতা পদকে সম্মানিত), প্রফেসর জিন্নাত ইমতিয়াজ আলী (মহাপরিচালক, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সটিটিউট) এবং মেজর জেনারেল(অব) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী ( প্রাক্তন হাই কমিশনার) গ্রন্থটির মুখবন্দ লিখেছেন।

Book_Prochhod_nirmol[1]

Endnotes:
  1. [Image]: http://priyoaustralia.com.au/wp-content/uploads/2016/06/Book_Prochhod_nirmol.jpg

Source URL: https://priyoaustralia.com.au/articles/film-book-art-others/2016/%e0%a6%b8%e0%a6%bf%e0%a6%a1%e0%a6%a8%e0%a6%bf%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%b8%e0%a7%80-%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%82%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%b6%e0%a7%80%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%b8/