“একুশে’র চেতনার বৈশ্বিক প্রাতিষ্ঠানিকতা অর্জন” বাস্তবায়নের রূপরেখা-৪ (প্রায়োগিক ছক-২)

by Nirmal Paul | June 11, 2019 4:56 pm

  

হান একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।  মাতৃভাষা ‘বাংলা’ রক্ষার জন্য বাংলাভাষা আন্দোলনের সুত্র ধরে স্বাধিকার আন্দোলনে উদ্ভুদ্ধকরনের মধ্য দিয়ে বিশ্বে মাতৃভাষা ভিত্তিক একমাত্র রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয়, এবং রাষ্ট্রের সর্বস্তরে মাতৃভাষা বাংলা’র ব্যবহার নিশ্চিত করে বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশের দৃষ্টান্তমূলক অগ্রযাত্রা ইউনেস্কোর সাধারণ পরিষদ কর্তৃক মহান একুশে ফেব্রুয়ারি’কে এই ঈর্ষনীয় সম্মানিত অবস্থানে উন্নিত করতে সাহায্য করেছে। ইউনেস্কোর সাধারন পরিষদ কর্তৃক গৃহীত সর্বসম্মত এই সিদ্ধান্ত গ্রহণের উৎস ইউএন মহাসচিব বরাবরে কানাডা অভিবাসী বাংলাভাষী প্রয়াত রফিকুল ইসলামের লিখিত প্রস্তাব। বিশ্বব্যাপী মাতৃভাষা অবক্ষয়ের ভয়াবহ গতিধারা সম্পর্কিত ইউনেস্কোর গবেষণালব্দ তথ্যের পাশাপাশি অভিবাসী জীবনে নতুন সমাজব্যবস্থায় বিভিন্নমুখি জটিলতায় মাতৃভাষা’র চর্চা, এবং প্রবাসে সংস্কৃতি-কৃষ্টি সংরক্ষনের সীমাবদ্ধতা রফিকুল ইসলামকে এই ঐতিহাসিক প্রস্তাবনায় উদ্যোগী হতে উদ্ভুদ্ধ করে। তাঁর এই প্রস্তাবনা যেকোন ভাষাভাষী/ অভিবাসী্র সাধারণ অনুভূতিতে মাতৃভাষার প্রতি প্রাকৃতিক, মানসিক এবং স্নায়বিক আবেগ এবং মৌলিক প্রয়োজনের সাথে বাংলাভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট, আন্দোলনের পর্যায়ক্রমিক উত্থান, স্বাধিকার আন্দোলনে উত্তরণ এবং সর্বোপরি স্বাধীনতা সংগ্রামে তাঁর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে অংশগ্রহণের চেতনা ভিত্তিক উদ্দিপনার বহিঃপ্রকাশ।                

মাতৃভাষা অবক্ষয়ের ভয়াবহ গতি বিষয়ে গবেষণালব্দ তথ্য ইউনেস্কোর বিশ্বকার্যক্রমে নতুন মাত্রা যুক্ত করে।  তার প্রেক্ষিতে মানব সভ্যতা, শিক্ষার ধারাবাহিকতা সুরক্ষায় সকল ভাষাভাষী কর্তৃক মাতৃভাষার চর্চা, তথা সুরক্ষার গুরুত্ব এবং প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে সকল ভাষাভাষীকে অবহিত করার মাধ্যমে নিজ নিজ মাতৃভাষা চর্চায় অনুপ্রাণিত করার লক্ষে বিশ্বের সকল ভাষাভাষী সম্মিলিতভাবে একটি বিশেষ দিবসকে আন্তর্জাতিক দিবস হিসেবে উদযাপনের বিষয়টি গুরুত্বের সাথে ইউনেস্কোর বিবেচনায় আসে। একই সময়ে বিশ্বের অবক্ষয়মান মাতৃভাষাগুলিকে ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে জনাব রফিকুল ইসলামের উপরোল্লিখিত সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব, এবং প্রস্তাবের উপর ভিত্তি করে দিবস হিসেবে ‘একুশে ফেব্রুয়ারি’ই সর্বোত্তম দিবস হিসেবে বিবেচনার পক্ষে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ইউনেস্কোর সাধারণ পরিষদে উপস্থাপন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণার প্রেক্ষাপট সৃষ্টিতে বিশেষ ভুমিকা রাখে। জনাব রফিকুল ইসলামের উদ্যোগ এবং বিরামহীন প্রচেষ্টার ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ সরকারের বলিষ্ঠ কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় ইউনেস্কোর সাধারন পরিষদে সর্বসম্মতভাবে মহান একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের সম্মানে অধিষ্ঠিত হয়।        

একই ধারাবাহিকতায় বিশ্বের ঝুঁকিপূর্ণ সকল মাতৃভাষা রক্ষায় একুশে’র চেতনার বৈশ্বিক প্রাতিষ্ঠানিকতা অর্জনের প্রায়োগিক কৌশল প্রণীত হয়। এই প্রায়োগিক কৌশল বাংলা এবং বাঙালির আন্তর্জাতিক পর্যায়ের ঈর্ষনীয় সম্মান অর্জন, এবং অর্জনের পথে বিভিন্নধাপ উত্তরণে অর্জিত অভিজ্ঞতার আলোকে বহুভাষাভিত্তিক আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভাষাসমূহ, জাতীয়তা, সংস্কৃতি-কৃষ্টিকেন্দ্রিক শিক্ষা-সামাজিক বাস্তব জটিলতার সাথে ভয়াবহ গতিতে মাতৃভাষা অবক্ষয়ের কারনসমূহ চিহ্নিত করণ, এবং পর্যায়ক্রমে ভাষাগুলিকে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা থেকে উত্তরণে সম্ভাব্য বাস্তবভিত্তিক কৌশলী কার্যক্রম সমূহের সমন্বয়ের উপর চিত্রিত। বৈশ্বিক এই কৌশল প্রণয়নে কয়েকশত  ভাষাভাষীর সাথে সরাসরি আলোচনা, পর্যালোচনা এবং বহুমাত্রিক গবেষণায় বিশ্বব্যাপী অবক্ষয়মান মাতৃভাষা সমূহের ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতির পেছনে সাধারণ কারনসমূহ প্রতিরোধে গণসচেতনতা সৃষ্টি এবং সহজতর উপায়ে গনসম্পৃক্ততা ভিত্তিক কার্যক্রমকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। বিশ্বের সকল ভাষাভাষীকে মাতৃভাষা চর্চার গুরুত্বের কথা অবহিত করা এবং চর্চায় সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ততার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সামগ্রিক পরিস্থিতির সমন্বিত বিবেচনার ভিত্তিতে চিত্রিত হয় নিম্নে বর্ণিত “প্রায়োগিক ছক”। প্রণীত এই ছকে ইউএন সদস্যভুক্ত সকল দেশ কর্তৃক ইউনেস্কোর নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকারসহ প্রবাসি/অভিবাসি বাঙালিদের সক্রিয় সহযোগিতায় সর্বত্র সকল মাতৃভাষা রক্ষায় একুশে‘র চেতনার প্রাতিষ্ঠানিকতা অর্জনে পারস্পরিক সহযোগিতার সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনাভিত্তিক কার্যক্রমের নেটওয়ার্ক বর্ণিত হয়েছে।                 

উপরের ছকে ইউনেস্কোর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন মিশনে ভয়াবহভাবে ঝুঁকিপূর্ণ মাতৃভাষা সমূহ চর্চার সহজতর উপায়ে সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টির পাশাপাশি সুরক্ষার লক্ষ্যে বিশ্বের সকল ভাষাভাষীকে সম্পৃক্ত করার বাস্তবভিত্তিক পরিকল্পনা চিত্রিত হয়েছে। সমন্বিত এই পরিকল্পনার প্রধান ভিত্তি ইউনেস্কো এবং বাংলাদেশের মধ্যস্থিত পারস্পরিক স্থায়ী সমঝোতাপূর্ণ কার্যক্রমের ঐকমত্য ভিত্তিক দ্বিপাক্ষিক চুক্তিনামা। পরিকল্পনানুযায়ী বিশ্বের সকল ভাষাভাষীর মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতাপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে সকলকে উৎসাহিত করে নিজ নিজ মাতৃভাষার চর্চা, তথা সুরক্ষায় সক্রিয় অংশগ্রহণের প্রয়োজনে ইউনেস্কোর মাতৃভাষা রক্ষার বিশ্বব্যাপ্ত মিশন প্রকল্পে বাংলাদেশ সরকারের দূতাবাসগুলির একুশ বিষয়ক বিশেষ শাখা ইউনেস্কোর সহযোগী প্রতিষ্ঠানের ভুমিকায় কাজ করবে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সকল ভাষাভাষীদের কাছে একুশের চেতনার বার্তা পৌঁছে দেয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের দূতাবাসগুলির পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট দেশে বসবাসকারী বাঙালিদের সক্রিয় অংশগ্রহণের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচিত হয়েছে। বাঙালিদের উৎসাহব্যঞ্জক অংশগ্রহণ মাতৃভাষা বাংলা রক্ষায় বাঙালির একুশের চেতনাকে বিশ্বব্যাপী সকল ভাষাভাষীর কাছে নিজ নিজ মাতৃভাষা রক্ষার অনুপ্রেরনা  সৃষ্টির সর্বোৎকৃষ্ট দৃষ্টান্তমূলক ধারা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবে। ফলশ্রুতিতে মহান একুশের চেতনায় উজ্জীবিত সকল  ভাষাভাষী নিজ নিজ মাতৃভাষা চর্চায় উৎসাহিত হবে। ভিন্ন ভাষাভাষীরা বাংলাভাষা আন্দোলনের ইতিহাস সম্পর্কে অবগত হয়ে মাতৃভাষার প্রতি বাঙালির আবেগ অনুভূতির সাহচর্যে নিজ নিজ মাতৃভাষা সংরক্ষণে উদ্যোগী হবে।    

বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগে ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত ইউনেস্কোর দ্বিতীয় ক্যাটাগরি প্রতিষ্ঠানের মর্যাদাসম্পন্ন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সিটিটিউটের গবেষণা কেন্দ্রিক বর্তমান কার্যক্রমে ইউনেস্কোর নিবিড়ভাবে সহযোগিতা এবং সম্পৃক্ততা এই বাস্তবতার উদাহরণ। ছকের পরিকল্পনানুযায়ী ইন্সিটিটিউটের গবেষণাভিত্তিক কার্যক্রমের সাথে ঝুঁকিপূর্ণ মাতৃভাষা সংরক্ষনের গুরুত্ব এবং প্রয়োজনীয়তার সম্প্রসারণভিত্তিক ব্যাপক বৈশ্বিক প্রচারনা, উদ্ভুদ্ধকরন এবং চর্চার কার্যক্রম সংযুক্ত এবং সমন্বয় সাধন করে ইন্সিটিটিউটকে ইউনেস্কোর উন্নততর অঙ্গসংগঠনের মর্যাদাসম্পন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের অবস্থানে দেখানো হয়েছে। ইউনেস্কোর বিধি অনুযায়ী প্রস্তাবিত এই ছক বাস্তবায়নে বাংলাদেশ জাতীয় কমিশণ, বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সিটিটিউটের সমন্বিত উদ্যোগী প্রস্তাবনা বাংলাদেশ সরকারের ইউনেস্কোর স্থায়ী প্রতিনিধির মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে ইউনেস্কোর সাধারন পরিষদে উত্থাপন প্রয়োজন। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক উপস্থাপনা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সিটিটিউটের সম্প্রসারণ পরিকল্পনার প্রস্তাবিত কার্যক্রমকে ইউনেস্কোর কার্যক্রম হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার বিষয়টি ইউনেস্কো এবং এমএলসি মুভমেন্টের সাথে ৭-৭-১৭ তারিখে অনুষ্ঠিত দ্বিপাক্ষিক স্কাইপ মিটিং এর কার্যবিবরণীতে সুস্পষ্ট ইংগিত রয়েছে।।                    

ছকে চিত্রিত পরিকল্পনা অনুযায়ী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন মিশন বাস্তবায়নে ইউনেস্কোর সদস্যভুক্ত বিভিন্ন রাষ্ট্রে অবস্থিত স্থানীয় জাতীয় কমিশণ(NATCom)কর্তৃক গৃহীত উদ্যোগে স্থানীয় সকল মাতৃভাষা চর্চা এবং সুরক্ষায় গণসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে নীতিমালা প্রণয়নে বাংলাদেশের দূতাবাস একুশের চেতনা বিধৃত কৌশলী সহায়তা প্রদান করবে। প্রধান প্রধান শহরে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্মৃতিসৌধ এবং লাইব্রেরীসমূহে ‘একুশে কর্নার’ এর বাস্তবায়ন হবে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের সর্বস্তরে যথাযোগ্য মর্যাদায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপনে স্থানীয় সকল ভাষাভাষীর অংশগ্রহণে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে গণসংযোগের প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি। স্থানীয় বাংলাদেশ দূতাবাস একুশে চেতনা ভিত্তিক কূটনৈতিক এবং কৌশলী পরামর্শ প্রদান করাসহ সংশ্লিষ্ট সকল কার্যক্রম বাস্তবায়নে প্রবাসি/অভিবাসি বাঙালিদের সক্রিয় অংশগ্রহণ, উৎসাহব্যাঞ্জক এবং অর্থবোধক ভুমিকাগ্রহনের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করার বিষয়টি ছকে বিশেষ গুরুত্বের সাথে বিবেচিত হয়েছে।                         

উল্লেখিত ছকে বিশ্বের সকল মাতৃভাষার চর্চা এবং সুরক্ষায় সর্বসাধারনের সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং সম্পৃক্ততার সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করার প্রয়োজনে বাংলাদেশ সরকার এবং ইউনেস্কোর পারস্পরিক সমঝোতা ভিত্তিতে প্রণীত উল্লিখিত কূটনৈতিক, প্রশাসনিক এবং নীতিমালা প্রণয়ন ভিত্তিক কার্যক্রমকে সমাজের সর্বস্তরের প্রত্যেকটি ভাষাভাষীর প্রতিটি মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়াকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়েছে। প্রতিটি মাতৃভাষার গুরুত্ব এবং রক্ষার প্রয়োজনীয়তার বার্তাসহ মাতৃভাষা অবক্ষয়ের ভয়াবহ ধারা রোধকল্পে রাষ্ট্র, প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি প্রত্যকেটি ভাষাভাষীর প্রতিটি মানুষের সক্রিয় অংশগ্রহণ অপরিহার্য ।  

সকল মানুষের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ ‘মাতৃভাষা’। বিষয়টি সমান গুরুত্বের সাথে সকল ভাষাভাষীর কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য, “Conserve Your Mother Language” বার্তাটি সকল ভাষাভাষীর কাছে সাধারণ সার্বজনীন বার্তা হিসেবে সর্বস্তরের সামাজিক মিডিয়া, প্রচার মাধ্যম, আইটি মিডিয়াসহ স্থানীয়, আঞ্চলিক, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিভিন্ন প্রচার এবং সকল সমাজসেবামূলক/গনহিতকর সংস্থার মাধ্যমে নিয়মিত সম্প্রচারনার প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি ছকে গুরুত্বের সাথে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।  (চলবে)    

পরবর্তী লেখাঃ  

একুশের চেতনার বৈশ্বিক প্রাতিষ্ঠানিকতা অর্জন

বাস্তবায়নের রূপরেখা-

(গণসম্পৃক্তকরণ/সম্প্রচারের বৈশ্বিক কৌশল)     

Source URL: https://priyoaustralia.com.au/articles/2019/%e0%a6%8f%e0%a6%95%e0%a7%81%e0%a6%b6%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%9a%e0%a7%87%e0%a6%a4%e0%a6%a8%e0%a6%be%e0%a6%b0-%e0%a6%ac%e0%a7%88%e0%a6%b6%e0%a7%8d%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%95-2/