by Tarik Zaman | August 10, 2017 2:17 am
গত সন্ধ্যায় (মঙ্গলবার, ৮ অগাস্ট ২০১৭) ক্যানবেরার বাংলাদেশ হাইকমিশনে বাংলাদেশের প্রথম মহিলা পররাষ্ট্র মন্ত্রী ডা. দিপু মনির (তিনি এখন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় কমিটি প্রধান) নেতৃত্বে কয়জন সরকারি এবং বিরোধী দলের সাংসদ এসেছিলেন। সাবেক বাণিজ্য মন্ত্রী কর্নেল ফারুক (অব:) এমপিও ছিলেন। আমাদের হাইকমিশনার কাজী ইমতিয়াজ হোসেন পুরো অনুষ্ঠানটা পরিচালনা করেন।
আমি এই প্রথম ডা. দিপু মনিকে দেখলাম। অতিশয় ভদ্র মানুষ। সবার প্রশ্নের উত্তর নাম ধরে ধরে দিয়েছেন পরিসংখ্যান এবং উদাহরণ সহ। সরকার যেখানে সফল সেইটা যেমন তুলে ধরেছেন, ঠিক তেমনি যেখানে সরকার এখনো যথেষ্ট সফল নয় তও ব্যাখ্যা করেছেন। BNP বা সেই সময়কে একবারও গালাগাল না করে নিজ সরকারের তুলনামূলক সফলতা তুলে ধরে যে সঠিক উত্তর দেয়া যায় তা ডা. দিপু মনির কাছ থেকে অন্য রাজনীতিকরা শিখতে পারেন। আমি এর আগেও অনেক মন্ত্রীর কথা সামনে বসে শুনেছি, কিন্তু এমন প্রাসঙ্গিক উত্তর এবং নিজ সরকারের সফলতা এতো সুন্দর করে বর্ণনা করতে দেখি নাই। ঢাকা মেডিকেল, লন্ডন ইউনিভার্সিটি এবং জন হপকিন্সএ পড়া ডা. দিপু মনির বক্তব্যকে এখানকার পাবলিক সার্ভিসের ভাষায় বলা যায়: Concise, succinct, articulated, evidence based, within time limit. অকারণ ইংরেজি শব্দের ব্যবহার ছাড়া যে প্রাঞ্জল বাংলায় মনের ভাব আদান প্রদান করা যায় তা ক্যানবেরার বাংলাভাষীগণ দেখলেন। পারিবারিক এবং রাজনৈতিক আভিজাত্য, সাথে দেশে এবং বাইরে পড়াশুনা এবং পৃথিবীর বড় বড় নেতার সংস্পর্শ ডা. দিপু মনিকে এই পর্যায়ে এনেছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। আবারো বলি আমরা একজন ভালো এবং ভদ্র মানুষকে কাছ থেকে দেখলাম এবং জানলাম। আমরা আশা করবো সরকারের সফলতা তিনি তার নির্বাচনী এলাকার মানুষের কাছে তুলে ধরবেন এবং সামনের নির্বাচনে আবারো জয় লাভ করবেন, কারণ এমন জ্ঞানী মানুষের কাছে বাংলাদেশ আরো আশা করে।
[1]
আমার ক্যানবেরাবাসী ভাইবোনদের উদ্দেশে কিছু না বলে পারছি না। বার বার বলা সত্বেও প্রশ্নকারীগণ আসল প্রশ্ন বাদ দিয়ে গৌরচন্দ্রিকা বড় করছিলেন, যে কারণে হাইকমিশনার এবং ডা. দিপু মনি নিজেও বার বার প্রশ্নকে ছোট্ট করে বলতে অনুরোধ করছিলেন। রাত হচ্ছিলো, কালকে অফিস আছে, তাই প্রশ্নকারীদের উপর অনেকেই বিরক্ত হচ্ছিলো। কেউ মাইক পেলে আর ছাড়তে চায় না- এই খাসিলত যে আমাদের কবে দূর হবে! আমরা তো অতিথিদের কথা শুনতে এসেছি, আপনাদের কথা না। প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানেও আমরা অনেক সাংবাদিক ভাইদের দেখি পাঁচ মিনিট ধরে প্রশ্ন করে, ফলে তেল আর ঘি এর স্রোতে মূল প্রশ্ন ঘাটে লাগে না, বয়ে চলে যায়। আমার বাবা বলতেন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করার আগে প্রশ্ন করা শিখতে হবে, নইলে মানুষ হাসবে। শুধু প্রশ্ন করার জন্য যেন প্রশ্ন না করি, কারণ প্রশ্নকারী নিজে কতটুকু জ্ঞান রাখে তা প্রশ্নের মধ্যেই প্রকাশ পায়। প্রশ্ন করার Level of sophistication টা আমাদের আরো একটু বাড়াতে হবে। কিছু কিছু ইংরেজি শব্দ দিয়ে একটা কঠিন বাংলা শব্দকে মসৃণতা দেয়া যায়, তাই Sophistication শব্দটা ব্যবহার করলাম।
হাইকমিশনের সবাইকে অনেক ধন্যবাদ এমন একটা অনুষ্ঠান আয়োজন করার জন্য।
Source URL: https://priyoaustralia.com.au/articles/2017/%e0%a6%b8%e0%a6%be%e0%a6%82%e0%a6%b8%e0%a6%a6-%e0%a6%a1%e0%a6%be-%e0%a6%a6%e0%a6%bf%e0%a6%aa%e0%a7%81-%e0%a6%ae%e0%a6%a8%e0%a6%bf%e0%a6%b0-%e0%a6%b8%e0%a6%be%e0%a6%a5%e0%a7%87/
Copyright ©2024 PriyoAustralia.com.au unless otherwise noted.