রোহিঙ্গা যুদ্ধের নতুন পর্যায়

by Fazlul Bari | October 14, 2017 5:18 am

ফজলুল বারী: রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান জটিল, দীর্ঘমেয়াদী হবে তা শুরু থেকেই বাস্তবাদীরা জানতেন। সেটি এখনই দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে। কিন্তু অনৈক্যের বাংলাদেশে এ নিয়ে যার যার অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখার বদলে এখনই শুরু হয়ে গেছে দুষাদুষির প্রতিযোগিতা! শাসকদল আওয়ামী লীগের মধ্যেও এ নিয়ে ঐক্য নেই। শেখ হাসিনা ভাবেন এক রকম, পারিষদবর্গ ভাবে আরেক রকম। আওয়ামী লীগের হিন্দু ভোটাররাও রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়া নিয়ে আওয়ামী লীগ তথা শেখ হাসিনার ওপর বেজায় ক্ষিপ্ত। কারন বাস্তুচ্যুত অসহায় মানুষগুলো তাদের কাছে অপ্রকাশ্যে ‘মুসলিম’ এবং প্রকাশ্যে ‘জঙ্গী’! এরা বিভিন্নভাবে দেশের সংখ্যাগুরু মুসলমানদের হাতে নির্যাতিত। দেশের মুসলমনদের মুখ ফুটে কিছু বলতে পারেনা। সুযোগ পেয়ে ঝাঁঝটা নিচ্ছে দূর্বল রোহিঙ্গাদের ওপর দিয়ে! রোহিঙ্গা ইস্যুর প্রতিক্রিয়ায় হিন্দু-মুসলিম ভেদাভেদ প্রয়াত সাংবাদিক-বাম প্রগতিশীল নেতা নির্মল সেনের এক উক্তির সঙ্গে মিলে যায়। নির্মল সেন বলতেন বাঙ্গালি প্রগতিশীল মুসলমান জবাই করলে ভিতরে একটি মুসলমান মানুষ বসা পাওয়া যাবে! আর হিন্দু প্রগতিশীল জবাই করলে ভিতরে বসা পাওয়া যাবে একটি হিন্দু মানুষ! ভারতের মোদী সরকারের অবস্থানও বাংলাদেশের এক শ্রেনীর হিন্দুদের রোহিঙ্গা বিরোধিতার অন্যতম কারন।

কী করলে বললে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধাচারন করা হবে সেটিই এখন বিএনপির একমাত্র কাজ। তাদের কাজ তারা করুক-করবে। কিন্তু কোন সমাধান তাদের কাছে নেই। সুজন নামের একটি এনজিওর হর্তাকর্তা বদিউল আলম মজুমদার দেশের সব বিষয়ের পন্ডিত! অথবা পন্ডিতনমন্য! তিনি সরকারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা ইস্যুতে কূটনৈতিক ব্যর্থতার অভিযোগ এনেছেন! বিষয়টা মিহিন সুরে বলতে গিয়ে বলেছেন, ‘আমরা কূটনৈতিকভাবে ব্যর্থ হয়েছি’! যেখানে সমস্যাটির আন্তর্জাতিক সমাধান নিয়ে যেখানে জাতিসংঘের ভেটো পাওয়ারওয়ালা একাধিক দেশ জড়িত, ভারতের হিন্দুত্ববাদী সরকার জড়িত, সেখানে টেবিল বাকোয়াজি ছাড়া কূটনৈতিকভাবে রাতারাতি সাফল্যের টোটকা বদিউল আলম মজুমদারদের জানা নেই। কারোরই জানা নেই। বদিউল আলম মজুমদারের নিজস্ব স্পেশাল কোন কূটনৈতিক টোটকা জানা থাকলেতো তার এনজিওর তহবিল সারা পৃথিবী থেকে আসতো।

কোন প্রেক্ষিতে নিজেদের জন্মভিটা ফেলে রোহিঙ্গারা আমাদের কাছে এসেছে এবং এখনও আসছে তা আমরা এখনও প্রায় ভুলে যাই। প্রথম কথা হলো বৌদ্ধ প্রধান বার্মা এদেরকে তাদের দেশের অনগ্রসর মুসলমান এই জনগোষ্ঠীর লোকজনকে মানুষ মনে করেনা। বার্মায় এদের নাগরিকত্বও নেই। সেদেশের সেনাবাহিনী মনে করে রোহিঙ্গারা বাঙ্গালি। এদের তারা রোহিঙ্গাও না, বাঙ্গালি বলা শুরু করেছে! বার্মার সেনাবাহিনীর সিদ্ধান্ত তাদের দেশে রোহিঙ্গা মুসলমানদের কোন অস্তিত্ব রাখবেনা। তাই তারা এদের তাদের দেশ থেকে বিতাড়নের পোড়ামাটি নীতি নিয়েছে। এদের বাড়িঘরে আগুন ধরিয়ে দিয়ে গুলি করে মেরে বানিয়ে মেয়েদের ধর্ষন করে বিতাড়ন করছে সেদেশ থেকে। জীবন বাঁচাতে এই বিপন্ন মানুষগুলো পড়ি কি মরি করে আশ্রয়ের আশায় বাংলাদেশে এসে উঠছে। বাংলাদেশে আসার কারনও তারা জানে এখানকার সিংহভাগ মানুষ তাদের মতো মুসলমান। আর টেকনাফ অঞ্চলের লোকজনের ভাষার সঙ্গে তাদের ভাষার মিল আছে।

কিন্তু বাংলাদেশের মতো দেশের আর রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ভার বহনের সামর্থ্য নেই। আগে যারা এসেছে তাদের কয়েক লাখ এখনও বাংলাদেশে। পৃথিবীর দেশহীন হতাশ মানুষেরা নানা অপরাধের সঙ্গে সহজে জড়ায়। যেমন আরব অঞ্চলের ফিলিস্তিনি, অস্ট্রেলিয়ার লেবানিজ মুসলিম আর বাংলাদেশের রোহিঙ্গা। বাংলাদেশের কক্সবাজার-টেকনাফ অঞ্চলের লোকজন আগে থেকে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিয়ে ত্যক্ত-বিরক্ত। নতুন শরণার্থী গ্রহনের তাদের আপত্তি ছিল সবচেয়ে বেশি। কিন্তু এবারতো শরণার্থী না, এসেছে রোহিঙ্গা সাইক্লোন! নাফ নদীর এপার থেকে দেখা যাচ্ছে ওপারে জ্বলছে সব রোহিঙ্গা গ্রাম। আর জান বাঁচাতে জন্মভূমি থেকে বিতাড়িত লোকজন পড়ি কি মরি করে পালিয়ে এসে আশ্রয় নিচ্ছে বাংলাদেশে। এবার ঢলের মতো এসেছে রোহিঙ্গা মানুষজন! এসেছে জলোচ্ছাসের মতো করে! বাংলাদেশতো অতীত অভিজ্ঞতায় শুরুতে এসব শরণার্থী নিতে চায়নি। অতীত অভিজ্ঞতা হচ্ছে এরা একবার এলে আর যেতে চায় না। আর এরা যাবে কোথায়? তাদেরতো কোন দেশ নেই। তাদের দেশ তাদেরকে স্বীকার করেনা। বাংলাদেশের লোকজন সারা বছর উন্নত জীবন আর আশ্রয়ের আশায় পৃথিবীর নানা দেশে গিয়ে শরণার্থী সাজে। দেশ সম্পর্কে নানান সাজানো বানোয়াট গল্প বলে! গল্পটা এমনও বলে যে বাংলাদেশে ঘর থেকে বেরুলে একজন আরেকজনকে ধরে কেটে মেরে ফেলে! আর রোহিঙ্গাদের জীবনের গল্পটিতো সাজানো কিছু নয়। পৃথিবীতে এরাই এখন দেশহীন প্রকৃত শরণার্থী।

বাংলাদেশ এবার এই শরণার্থী ঢল-জলোচ্ছাস-সাইক্লোন ঠেকাতে কী করতে পারতো? নাফ নদীর এপার থেকে বর্ডার গার্ড বা কোস্ট গার্ডদের দিয়ে ডুবিয়ে মেরে ফেলতে পারতো সব রোহিঙ্গা নৌকা! এটা কী কোন সভ্য মানুষ চিন্তা করতে পারে? আর যুদ্ধ ঘোষনা করতে পারতো বার্মার বিরুদ্ধে! এ নিয়ে বার্মিজ উস্কানিও কমতো ছিলোনা। বিএনপির এক অধ্যাপক টেলিভিশনে বলেছেন, বার্মিজ হেলিকপ্টার এতোবার বাংলাদেশের আকাশসীমা লংঘন করলো! বাংলাদেশের কী একটাও হেলিকপ্টার নেই? যুদ্ধের জন্যে বার্মিজ উস্কানির মতো এটিও এক ধরনের উস্কানি। বাংলাদেশের কাজতো যুদ্ধ করা নয়। বাংলাদেশ এমনিতে এখন যুদ্ধ আক্রান্ত। বার্মার চাপিয়ে দেয়া এই যুদ্ধের নাম রোহিঙ্গা যুদ্ধ।

রোহিঙ্গা নামের বিপন্ন জনগোষ্ঠীর ভাগ্য ভালো বাংলাদেশে এখন শেখ হাসিনার মতো একজন নেত্রী প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে আছেন। বিশেষ মানবিক গুনাবলী সম্পন্ন তার একজন বোন আছেন যার নাম শেখ রেহানা। পচাত্তরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর এই দুইবোন বিদেশে দীর্ঘদিন শরণার্থী জীবন কাটিয়েছেন। শরণার্থী জীবনের কষ্ট তারা জানেন। তাই দুইবোন মিলে সিদ্ধান্ত নিয়ে তারা বিপন্ন শরণার্থীদের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেছেন। দুইবোন এখানে শরণার্থী শিবিরে ছুটে গিয়েছেন। শেখ হাসিনা তাদের ভরসা দিয়ে বলেছেন, আমরা মানুষ, এদের বিপদের দিকে ঠেলে দিতে পারিনা। প্রয়োজনে একবেলা খাবো, আরেকবেলার খাবার তাদের ভাগ করে দেবো। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, যতদিন শরণার্থী আসবে ততদিন তাদের গ্রহন করা হবে।

শরণার্থী সাইক্লোনে এরমাঝে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে কক্সবাজার-টেকনাফ অঞ্চলের পরিবেশ! পাহাড় কেটে শরণার্থীরা ঘর তুলেছে! একটা সাইক্লোনে যেন একেকটি এলাকার প্রকৃতি পরিবেশকে লন্ডভন্ড করে দেয় বার্মিজ পশুদের মনুষ্য সৃষ্ট সাইক্লোনে কক্সবাজার জেলার অবস্থা তেমনি দাঁড়িয়েছে। এই সুযোগে আমরা কল্পনা করতে পারি একাত্তরে ইন্দিরা গান্ধীর ভারত আমাদের জন্যে কী করেছে! ৫-১০ লাখ মানুষ সামাল দিতে আমাদের পেরেশানির অবস্থা, আর একাত্তরে তখনকার অনুন্নত ভারত আশ্রয় দিয়েছে আমাদের এক কোটি মানুষকে!

তখন শরণার্থী শিবির বানানোর আগ পর্যন্ত তারা বিভিন্ন এলাকার স্কুল-কলেজে শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়া হয়। অনেকে আত্মীয়স্বজনের বাড়িঘরে চলে যায়। এরজন্যে বাংলাদেশের শরণার্থীদের কারনে ভারতের অর্থনীতিতে ব্যাপক চাপ পড়ার ঘটনা ঘটলেও পাহাড়-বন উজাড় তথা পরিবেশ ধবংসের অভিযোগ নেই। আর এখানে শুরুতেই আমরা বলে দিয়েছি এরা সব ক্যাম্পে থাকবে। আত্মীয়স্বজনের বাড়ি যেতে পারবেনা। অথচ আমরা তখনও ক্যাম্পও বানাইনি। তাহলে এদের দ্বারা পাহাড় ধবংস হবেনাতো সেখানে ফুল বাগান হবে? বলা হচ্ছে রোহিঙ্গারা সবাই জঙ্গী, ইয়াবা ব্যবসায়ী! অস্ট্রেলিয়াতেওতো রোহিঙ্গা আছে। এরা বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন পথ ঘুরে অস্ট্রেলিয়া এসে পৌঁছেছে। কই এখানেতো কেউ ইয়াবার নামও জানেনা! এখানে এদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগও নেই। সবাই কাজ করে খায়দায়। দেশ বা দেশে কেউ নেই বলে টাকা পাঠানোরও কেউ নেই। এদের কেউ এখানে লুঙ্গি পরেনা। জিনস-টি শার্ট এসবই পরে। একেকজনের রাজপুত্রের মতো চেহারা। আসলে পরিবেশই মানুষ গড়ে দেয়। বাংলাদেশে পৌঁছার পর, বাংলাদেশ আশ্রয় দেবার পর অনেকের নজর পড়েছে রোহিঙ্গা নারীদের পেটের দিকে! প্রশ্ন তোলা হয়েছে এত মেয়ের পেটে বাচ্চা কেনো? কী সব অদ্ভুত প্রশ্ন! এরা বার্মার আরাকান নামের সবচেয়ে সুবিধাবঞ্চিত এলাকার লোকজন। এদের এলাকার বাচ্চাদের কোনদিন একটি টিকা পর্যন্ত দেয়া হয়নি। এদের এলাকার যুবকদের রাতের বেলা স্ত্রী সঙ্গম ছাড়া কোন বিনোদন নেই। তাহলে ‘মুখ দিয়েছেন যিনি আহার দেবেন তিনি’ নীতি অঞ্চলের মেয়ে মানুষদের জীবনে বছর বছর বাচ্চা আসবেনাতো পরিবার পরিকল্পনার ফর্মূলা আসবে?

এখন আসল প্রসঙ্গে আসি। এরমাঝে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিয়ে বার্মার চতুর জান্তার সব ধারনা প্রকাশিত। কারন তাদের পক্ষে রাশিয়া-চীনের মতো জাতিসংঘের ভেটো পাওয়ারওয়ালা দুই দেশ! দিল্লীর হিন্দুত্ববাদী সরকারও বার্মিজ জান্তার রোহিঙ্গা মুসলিম নিপীড়নের পক্ষে। রোহিঙ্গা শরণার্থী পরিস্থিতির কারনে জাতিসংঘে এবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গুরুত্বপূর্ন ছিলেন। কিন্তু দুই ভেটোপাওয়ারওয়ালা দেশ বার্মিজ জান্তার পক্ষে থাকায় জাতিসংঘ রোহিঙ্গা নিপীড়ন বন্ধে ব্যর্থ হয়েছে। অতএব এই কূটনৈতিক ব্যর্থতা বাংলাদেশের নয়, জাতিসংঘের। বিশ্বমোড়লদের। এখন আন্তর্জাতিক জনমত ঘোরাতে অং সাং সূচি তার সিনিয়র এক মন্ত্রীকে ‘প্রকৃত রোহিঙ্গাদের’ ফেরত নেবার কথা বললেও তারা যে তা করবেনা এটি বার্মিজ জান্তার অব্যাহত নিপীড়ন আর জান্তা প্রধানের বক্তব্যে প্রকাশিত। বাংলাদেশকে এখন এই যুদ্ধের পরবর্তি কৌশল ঠিক করতে হবে।

আমি চাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শরণার্থীদের পক্ষে সহানুভূতিশীল দেশগুলো সফরে বেরুবেন। জাতিসংঘ এরমাঝে শরণার্থীদের জন্যে পর্যাপ্ত ত্রান সাহায্য সংগ্রহে ব্যর্থতার কথা স্বীকার করেছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিশ্বব্যাংকের সাহায্য নেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু বিশ্বব্যাংকের এসব সাহায্য মানে ঋণ! নিজের দেশের এত প্রয়োজন বাদ রেখে বাংলাদেশ কেনো শরণার্থীদের ভরনপোষনের জন্যে ঋণ নেবে! কাজেই ইস্যুটির সমাধানের পক্ষে বিশ্বজনমত চাঙ্গা রাখতে, শরণার্থীদের সহায়তায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন দেশ সফরে বেরুলে পজিটিভ কিছু আসবেই। আমাদের প্রথম টার্গেট থাকবে রোহিঙ্গাদের তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর। সেটি সম্ভব না হলে সহানুভূতিশীল দেশগুলোয় তাদের পাঠানোর চেষ্টা করা যেতে পারে। আর সংগ্রহ করতে হবে পর্যাপ্ত ত্রান। কারন এদের এখানে অনেকদিন আমাদের রাখতে হবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আশা করছি প্রধানমন্ত্রীর সফর প্রস্তুতির কাজ করছে অথবা করবে। বিপন্ন মানুষগুলোকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ কী বিশাল মানবিক দায়িত্ব পালন করেছে তা শুধু লিখে বোঝানো যাবেনা। ইস্যুটির কারনে বাংলাদেশের প্রতি আলাদা আন্তর্জাতিক মনোযোগ তৈরি হয়েছে। কাজেই বাংলাদেশকে প্রতিটি পদক্ষেপ নিতে হবে মেপে। এভাবে জিততে হবে চলতি যুদ্ধে। মানুষের পক্ষে মানবতার পক্ষে আছে বাংলাদেশ। এই যুদ্ধে বাংলাদেশের হার নেই।

Source URL: https://priyoaustralia.com.au/articles/2017/%e0%a6%b0%e0%a7%8b%e0%a6%b9%e0%a6%bf%e0%a6%99%e0%a7%8d%e0%a6%97%e0%a6%be-%e0%a6%af%e0%a7%81%e0%a6%a6%e0%a7%8d%e0%a6%a7%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%a8%e0%a6%a4%e0%a7%81%e0%a6%a8-%e0%a6%aa%e0%a6%b0/