by Dr Saniyat Islam | September 14, 2017 8:03 am
আপনারা যারা বাংলাদেশে এই লেখা পড়ছেন তারা হয়তো মনে করছেন এটা আবার কি? ম্যারেজ তো ম্যারেজই এটার আবার সমতা কি? এই প্রশ্নের জবাব দেবার আগে কিছু জিনিসের ব্যাপারে কথা বলতে হবে এবং জানতে হবে। বাংলাদেশ কিংবা অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশে অথবা ধরুন কোনো অনুন্নত দেশে সবচেয়ে প্রাগৈতিহাসিক যে প্রথা চলে আসছে তার নাম বিবাহ বা বিয়ে। সামাজিক/ধর্মীয়ভাবে এই প্রথাটি একমাত্র স্বীকৃত প্রথা যা কিনা নর-নারীকে তাদের যৌন চাহিদা মেটানোর এবং সন্তান উৎপাদনের লাইসেন্স দেয়। আপাত দৃষ্টিতে খুব গৌণ হলেও এটি মানবসভ্যতার পৃথিবীব্যাপি ছড়িয়ে পরার একটি মূল কারণ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। খুব স্হূলদৃষ্টিতে দেখলে পুরো পৃথিবীটাই টিকে আছে এই মানুষের ক্ষুধা এবং যৌনক্ষুধা নিবৃত্তির প্রতিযোগিতায়। আগেই একবার বিবাহকে সংজ্ঞায়িত করার চেষ্টা করেছি এবার দেখি এটার শাব্দিক মানে কি ? ইন্টারনেটে সার্চ করে আপনি সম্ভবতঃ এটি পাবেন
Marriage
noun
“a happy marriage”
synonyms: wedding, wedding ceremony, marriage ceremony, nuptials, union; More
“her music is a marriage of funk, jazz, and hip-hop”
synonyms: union, alliance, fusion, amalgamation, combination, affiliation, association, connection, coupling, merger, unification; informal hook-up
“the piece is a marriage of jazz, pop, and gospel”
শুধু অনুন্নত কিংবা উন্নয়নশীল দেশের কথা বললে ভুল হবে অনেক উন্নত দেশেও এই প্রথাটি এখনো চালু আছে সোশ্যাল বেনিফিট পাবার জন্য, পার্থক্য হচ্ছে আপনি বিবাহিত না হয়েও সম্পর্ক আছে (ডি ফ্যাক্টো) এটাই যথেষ্ট। উন্নত বিশ্বে বিয়ের ব্যাপারটি দিন দিন কমে যাচ্ছে। আমার কথা বিশ্বাস করতে হবেনা, পরিসংখ্যান বলছে ১৯৬০ সালে আমেরিকার ১৮-২৪ বছরের মধ্যে বিয়ের হার ছিল ৪৫% যেটা এখন ২০১৬তে দাঁড়িয়েছে ৯% এ[1]। ইকোনোমিস্ট এর ২০১১ এর (জুন ২৩ সংখ্যা ) উপাত্ত অনুসারে এখন মাত্র ৪৫% গৃহে বিবাহিতযুগল দেখা যায় (তথ্যসূত্র: সেনসাস ব্যুরো অফ আমেরিকা), যেটা মোটেই আশ্চর্য হবার মতো বিষয় নয় কারণ এই দেশগুলোতে শিক্ষিতের হার ১০০% এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত। একই কারণে উন্নত দেশগুলিতে ধর্মীয় অনুশাসন এবং গোঁড়ামি দিন দিন কমে আসছে এবং মানুষ ধর্মের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। আমার কথা বিশ্বাস করতে হবে না, দেখুন অস্ট্রেলিয়ান ব্যুরো অফ স্ট্যাটিসটিক্স এর ২০১৬ এর সমীক্ষার আলোকে ধর্মকে না বলা মানুষ যেকোনো বারের মধ্যে সর্বোচ্চ[2]।
আপাতঃদৃষ্টিতে ধর্মের প্রয়োজনীয়তা উন্নত সমাজব্যবস্থায় দিন দিন কমে আসছে কারণ তারা প্রাতিষ্ঠানিক ধর্ম ব্যবস্থার উপর আস্থা হারাচ্ছে কারণ বিজ্ঞান যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তাতে ধর্মের অসারতা নগ্ন হয়ে জনসম্মুখে চলে আসছে। অল্পদিন আগেই বর্তমান পোপ ফান্সিস ঘোষণা দিয়েছেন যে “ইভোল্যুশন এবং বিগ ব্যাং দুটোই সত্য এবং ঈশ্বর কোনো জাদুদন্ড হাতে থাকা ম্যাজিশিয়ান নন। “[3] মুসলিম বিশ্ব এখনো এগুলো স্বীকার করেনা এবং বলা যায় এখনো আত্মশুদ্ধির জায়গা থেকে অন্যান্য ধর্মগুলোর চেয়ে কয়েকশো বছর পিছিয়ে আছে, কারণ এখন তারা বলে যে সূর্য পৃথিবীর চারদিকে ঘোরে , কিংবা পৃথিবী সমতল[4]। এ কথাগুলোর অবতারণা জরুরি একারণে যে ধর্মীয় বিশ্বাস মানুষকে কুসংস্কারাচ্ছন্ন করে, অনেক ক্ষেত্রে অন্ধ করে রাখে যেমনটা আমরা দেখতে পারি সমকামিতার ক্ষেত্রে। এই পুরো লেখাটির এইটুকু গৌরচন্দ্রিকার প্রয়োজন ছিলো কারণ পশ্চাদপসরণ আমাদের বাঙালিদের মধ্যে প্রকট, বিশেষ করে প্রবাসীদের মধ্যে এ ব্যাপারটি অত্যন্ত প্রখর, অন্তত: বছর দশেক এর অভিজ্ঞতা তাই বলে। জানার কিংবা প্রশ্ন করবার মানসিকতা আমাদের সামনে এগুতে দিচ্ছে না। সমকামী কিংবা সমকামিতা নিয়ে খোলাখুলি কথা বলা এখনো ট্যাবু। একটু পড়াশোনা করলেই কিন্তু এই ব্যাপারে অনেকের যে ভুল ধারণা রয়েছে এগুলো ভেঙ্গে যাবে এবং আপনিও মানসিক দীনতা কিংবা যন্ত্রনা থেকে মুক্তি পাবেন। সমকামিতা কোনো অসুখ নয় কিংবা ঐচ্ছিক নয় [5](যা আপনি বা আমি সারাজীবন জেনে এসেছি) এটি জিন দ্বারা প্রভাবিত এবং প্রাণীকুলের অনেক প্রজাতির মধ্যে বিদ্যমান এবং স্বাভাবিক। ১৯৯০ এর পরের অনেক বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্র[6] প্রকাশ হয়েছে এ ব্যাপারে এবং আমার অনুরোধ থাকবে একটু পড়াশোনা করবেন এ ব্যাপারে। অস্ট্রেলিয়ার এখনকার অনেকগুলো ইস্যুর মধ্যে এটা একটা এবং জনমত তৈরী হয়েছে সমকামীদের বিয়ে করে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেবার। পোস্টাল ভোটের মাধ্যমে জানতে চাওয়া হয়েছে আপনি কি এ ব্যাপারে একমত? তারপর আইন করে স্বীকৃতি দেয়া হবে অন্যান্য উন্নত দেশগুলোর মতো।
অনেকেই বলছেন এটা নিয়ে শুরু হচ্ছে নোংরা রাজনীতি এবং কদর্য হচ্ছে দিন কে দিন। সমকামীরা এ ও বলছেন যে সমকামীদের বিয়ের বৈধতা দেবে বিষমকামীরা, এই প্রসেসটা নিজেই একটি হোমোফোবিয়া। আমি ভোট দেব ওদের স্বীকৃতির পক্ষে, মানবতার পক্ষে, সভ্যতার পক্ষে, সমতার পক্ষে। ………আপনি?
Source URL: https://priyoaustralia.com.au/articles/2017/%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%b9%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%b8%e0%a6%ae%e0%a6%a4%e0%a6%be-%e0%a6%95%e0%a6%bf%e0%a6%82%e0%a6%ac%e0%a6%be-%e0%a6%ae%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%b0/
Copyright ©2024 PriyoAustralia.com.au unless otherwise noted.