by Dilruba Shahana | August 20, 2017 7:11 am
নারীবাদ, শাবানা আজমী ও আরও…
শাবানা আজমী খুব সংবেদনশীল, সহৃদয় একজন মানুষ। শুধু মেয়েদের জন্যই নয় বস্তিবাসীর অধিকার নিয়েও সহজেই শাবানা রাস্তায় নেমে এসেছেন তাও পত্রিকায় দেখা গেছে। অভিনেত্রী হিসেবে শাবানা আজমী দূর্দান্ত তুখোড়। সত্যজিৎ রায় বলেছিলেন পৃথিবীর সেরা দশজন অভিনেত্রীর দু’জন রয়েছেন ভারতে তারা স্মিতা পাতিল আর শাবানা আজমী। এই গুণী অভিনেত্রী একজন বুদ্ধিমান মানুষ। নিজের কাজকর্ম নিয়ে পরিস্কার ব্যাখ্যা বিশে¬ষণ দেওয়ার অসাধারন প্রত্যুৎপন্নমতিত্ব রয়েছে তার।
ঘটনা হল একবার নারীবাদী শাবানা আজমী ও তার স্বামী কবি ও গীতিকার জাভেদ আখতার আমেরিকা গিয়েছেন। অনুষ্ঠানে যাওয়ার আগে শাবানা স্বামীর কুর্তা ইস্ত্রি করছিলেন। কুর্তা ইস্ত্রিতে ব্যস্ত শাবানাকে দেখে একজনের চোখে রাজ্যের বিস্ময় । নারীবাদী একি করছে! স্বামীর কুর্তা ইস্ত্রি করছে!
শাবানার উত্তর ছিল ‘দেখ জাভেদ ইস্ত্রিবিহীন জামাটাই পরে চলে যেতো। ওর কোন অসুবিধা ছিল না। আমার সখ বা ইচ্ছা ও সুন্দর ইস্ত্রি করা কুর্তাটা পরে যাক। এখানে নারীবাদ কেন বাঁধা হয়ে আসবে।’
সেচ্ছায় মনের আনন্দে যে কোন কাজ করতে নারীবাদ কোন সমস্যা নয়। এতে কোন অসুবিধা নেই। তবে সমাজ সংসার যদি ওই কাজটি পুরুষের এবং এই কাজটি নারীর বলে অবশ্যপালনীয় নিয়মকানুন চাপিয়ে দেয় তখনি সমস্যা।
বেশ কিছু বছর আগের ঘটনা। পৃথিবীর প্রায় সব দেশের টিভিতে(আমার নিজের চোখে দেখা বাংলাদেশ টিভি থেকে বিবিসি টিভি প্রায় সব জায়গায়) যেকোন ক্লিনিং প্রোডাক্টের বিজ্ঞাপনে শুধুমাত্র মেয়েদের দেখা যেতো। টিভির পর্দায় দেখা যেতো টয়লেট ক্লিনার থেকে ওভেন ক্লিনার সবকিছু হাতে নিয়ে মেয়েরা ছুটাছুটি করে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার মহাযজ্ঞে ব্যস্ত। আমরা কয়েকজন বন্ধু(আমি, আয়ারল্যান্ডের ওলগা, ভারতের রোহিণী, জার্মানীর ফ্রা ভন মোশে)মিলে ঠিক করলাম পত্রপত্রিকায় এই ধরনের বিজ্ঞাপনের বিরুদ্ধে চিঠিপত্র লিখতে শুরু করবো। চুলা-আভেন, কমোড-বেসিন সব সাফসুত্রা করার দায়িত্ব শুধুই মেয়েদের এই ধারনাকে বদ্ধমূল করানোর জন্যই টিভিতে ক্লিনিং প্রোডাক্ট হাতে নিয়ে মেয়েদেরই বারবার দেখানো হচ্ছে। এই বিজ্ঞাপন ‘স্যোশিয়ালী কন্সট্রাক্টেড’ মেয়েদের কাজ এই চিন্তা থেকে উৎসারিত।
যা হোক তার পরের বছরই ডঐঙ( ওয়ার্ল্ড হেল্থ অরগানাইজেসন) এক রিপোর্টে একটি তথ্য দেখে বেশ আনন্দ হল। ভাবলাম যে মেয়েদের কাজ আসলে এখন আর দৃষ্টির এড়িয়ে যাচ্ছে না। WHO ( ওয়ার্ল্ড হেল্থ অরগানাইজেসন) রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে সমগ্র বিশ্বের সাফসুতরা রাখার কাজের শতকড়া পঁচাত্তর (৭৫%)ভাগ কাজই সম্পন্ন করেন মেয়েরা।
শাবানা আজমীর ঘটনা ও WHO (ওয়ার্ল্ড হেল্থ অরগানাইজেসন)র তথ্যের প্রেক্ষিতে দেখা যায় মেয়েরা আছে বলেই পৃথিবীর চারপাশ বেশ ঝক্ঝকে আর নিপাট থাকে। বিদেশে ফরমায়েস দেওয়ার লোক ছিলনা তবে সচেতন মায়াবতী স্ত্রী শাবানা আজমী সঙ্গে ছিলেন তাই কবি জাভেদ আখতারকে কুচকানো কুর্তাটি পরে অনুষ্ঠানে যেতে হয়নি।
Source URL: https://priyoaustralia.com.au/articles/2017/%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%b9%e0%a6%bf%e0%a6%a8%e0%a7%80-%e0%a6%b8%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%af-%e0%a7%a9/
Copyright ©2025 PriyoAustralia.com.au unless otherwise noted.