হরেক রকম আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ

by Sharmin Zohra Shimi | November 10, 2016 11:34 am

কিছু মানুষের টাকা কড়ির ঝঞ্ঝনানি শুনি, শুনতে চাইনা, “তাহারা শুধায়” তাই বাধ্য হয়ে শুনতে হয়। ‘থ্রি ইডিয়েটস’ মুভির “প্রাইস ট্যাগ” আমাদের আশে পাশে অহরহ। দুঃখের বিষয় হলো এটি পুরুষের চেয়ে মহিলাদের মধ্যে প্রকোপ বেশি, বিশেষ করে বিবাহিতাদের মধ্যে। আরো লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে, যারা বেশির ভাগ স্বনির্ভরশীল নয় তাদের মধ্যে। ধনী পতির প্রতাপেই তারা তপ্ত।
পক্ষান্তরে, যারা চিরকালের অভ্যস্ত তাদের এসবে বীকার নেই। ভরা কলস তো একটু কমই বেজে থাকে। আবার, যখন কোন শিক্ষিতকে শুনি, আমার আসলেই আফসোস হয় ওর সার্টিফিকেটস আর অনর্থ শিক্ষায় ব্যয়কৃত অর্থের জন্য। ওই টাকায় কিছু অনাথ বা সুবিধা বঞ্চিতদের পড়ালে সমাজের উপকারে আসত।

আবার কেউ কেউ করেন এটি সুকৌশলে, নিজেকে গরীব বলতে থাকেন যেহেতু সবাই জানে তার অবস্থান অনেক উঁচু, আর অন্যকে “বড়লোক” আখ্যায়িত করতে থাকেন। হয়তো নিজেরই প্রত্যাশা থাকে কিছু “তৈল জাতীয় (অপদার্থ)” লাভ। জানি না এটি কেমন ভদ্রতা। আর, ভদ্রতায় কেনই বা বৈষয়িক বিষয় আসবে?

কোন কোন নারী চাকরিতে যান অফিস করেন, কিংবা স্কুল-কলেজে ক্লাস নেন, সেই সাথে করেন সোনার চেইন আংটি এসব প্রদর্শন, আসলে নিজের স্বাচ্ছল্য বোঝাতে চেষ্টা করেন। আবার কোন নারী অফিস করেন, আর শোনান যে, চাকরিটা তার না করলেও চলে!

পড়াশোনার শেষ দিকে ক্লাসমেটদের মধ্যে মেয়েদের চেয়ে ছেলেদেরকে ভালো বন্ধু ভাবতাম কারন আমাদের মেয়েদের মধ্যে বৈষয়িক আলোচনা বেশি যা বিরক্তিকর। কে অমুক জায়গা থেকে দামি শাড়ি কিনলো, কতগুলো কিনলো, অমুক কি ড্রেস পরলো, কোন ব্র্যান্ডের, কার এঙ্গেজমেন্ট আংটি হীরের… আরো কত কী! বিপরীতে আমি কোন বান্ধবীকে পাইনি যে খেলাধুলা নিয়ে আলোচনা করে, নাসা কোন গ্রহে নতুন কোন যান পাঠাতে যাচ্ছে কিনা সে খবর রাখে কিংবা এ বছর সাহিত্যে কে নোবেল পেলেন সে আলোচনা করে! বরঞ্চ, শুনেছি ব্যক্তি কেন্দ্রিক সমালোচনার কথা অহর্নিশ।

তবে ছেলে বন্ধুদের মধ্যে একজনও এমন ছিল না বললে ভুল হবে, পাঁচ জনে একজন ছিল যে তাদের অমুক জায়গার বাড়ির আর্থিক মূল্য কত কোটি সে হিসেব বন্ধুদেরকে শোনায়। মেয়েদের গয়নার গল্প যেখানে চারজনে তিনজন।

আমার কোন কালেই প্রতিপত্তির কথা শুনতে ভালো লাগে না। দেখলাম শুধু আমি নই, অনেকেই ঘৃণা করে বিষয়টা। কাঁচা পয়সার গল্পোয়ালাদেরকে এভোয়েড তো বটেই সম্পর্ক পর্যন্ত ছিন্ন করতে চায় কেউ কেউ। আসলে অপছন্দ হবারই তো কথা। আমি ভাবতাম নিতান্তই যার শিক্ষার অভাব তার গল্পের কিছু নেই বলেই এসব কচকচানি, কিন্তু লেখাপড়া জানাদের মধ্যেও আছে। পার্থক্যটা কেবল প্রকাশভঙ্গীর।

লেটেস্ট মডেলের গাড়ি, ব্র্যান্ড্রের ফোন, অত্যাধুনিক ফ্ল্যাট, দামি শাড়ি-গয়না, বিদেশি  মেকাপ ছাড়াই আমরা একদিন সত্যিকার আধুনিক মানুষ হয়ে উঠবো এই আশা করি। পৃথিবীতে এখনো গঠনমূলক আর ইন্টারেস্টিং অনেক আলোচনা না জানা অনেক কাহিনী আছে সেগুলো নিয়ে ভাববো।

Source URL: https://priyoaustralia.com.au/articles/2016/8884/