ধলেশ্বরী-৩

by Maksud Alam | August 11, 2016 11:50 am

মিজা’ গালিব, ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রহ কালীন সময়ের এক বিখ্যাত ব্যত্তিত্ব। অবশ্য এই পরিচয়ের চেয়ে তার বড় পরিচয় হচ্ছে, তিনি সে সময়ের সবচে স্বনামমধ্য কবি। শেষ বাদশা বাহাদুর শাহ জাফরের সভাকবি তিনি। লালকেল্লার রাজকীয় আসর মাতিয়ে রাখতেন তার অতুলোনিয় শেরের মুঞ্চনায়। শুরা আর শাকি কে দিয়েছিলেন শেরের বেষ্ণনায় অসাধারন সৃজনশীলতা। একবার দিল্লীর দরবারে বাদশা জাফরকে নিবেদন করেছিলেন এক শের-
রহস্যময় তোমার কব্য, অতুলনীয় ভাষা গালিব
তোমায় দেবদূত ভাবতাম, যদি মদ্যপ না হতে।
এযেনো দাক্ষা রসের প্রতি গালিবের আসত্তির স্বগৌরব ঘোষনা। শুরা আর শকিকে নিয়ে পরবাসী জীবনের একটি ছোট্ট ঘটনার তুলে ধরবো বলেই গলিবকে নিয়ে এই ভূমিকার অবতারনা।
কাহিনী – রাতের গোলাপ
রেস্টুরেন্টেরর কাজটা বাদদিয়ে কাজ নিয়েছি সুপার মার্কেটে। এখানে আবার কাজের উপর নিভর করে প্রবাসীদের সামাজিক অবস্থান। ৮-৫ সরকারি চাকরিওলাদের কাছে অন্যদের অবস্থান অনেকটা নিণ্মবনের হিন্দুদের মত, ছোয়াতে জাত য়ায। সেই প্রসঙ্গ আপাতত থাক, পরে কোন এক সময় সেই গান নাহয় গাইবো। আজকে শাকিকে নিয়েই থাকি। সুপার মার্কেটটা শহরের বেশ অভিজাত এলাকায়। সংসদের অধিবেশন যখন থাকে তখন প্রতিদিনই ২/১টা মন্ত্রী কিংবা এমপিকে দেখা যায় লাইনে দাড়িয়ে আছে, আলু পিয়াজের ব্যাগ হাতে নিয়ে। ভাবতেই বড় মজা পাই। স্বদেশেতো মন্ত্রী দশন বড় সৌভাগের বিষয় ছিলো, আর এখানে লাইনে দাড়িয়ে আলু পটল কিনে- আমার মত বাঙ্গালীর এতো- তাজমহল দশন। বড় অভাগা মুন্ত্রী ভাই তোমরা, যদি জন্মেতে বঙ্গে তাহলে জানতে মন্ত্রী কি জিনিস, শুধু কি তুমি, তোমার আশেপাশের দুই তিন কিলোমিটারের লোকজনও বুঝতো তুমি কি চিরিয়া ভাই। শুএবার দিন সন্ধ্যার পর ভিড়টা একটু বেড়ে যায়। সারা সপ্তাহের কাজের পর আয়েশ করার রাত আজ। আশেপাশের পাব আর রেস্টুরেন্টের অধমাতাল ক্রেতাদের হূড়হূড়ি পরে যায়। সেদিনতো এক শুরাপ্রেমি আমার গাত্র বরন নিয়ে তার আপত্তির কথাটা একটু উচ্চ স্বরেই জানিয়ে দিলো। কয়লা ধুইলে কি ময়লা যায় । চোরের জাত শিক্ষা দিক্ষা পেলে মানুষ হয় ঠিকই তবে সব না। দুই একটা ঠিকই পূবপূরুষের ধারা বজায় রাখে। এ হচ্ছে তেমনই এক জন। সামারের সময় হূল্লোড়টা জমে ভালো। সন্ধ্যার শুন শান বাতাস আর শুরার প্রভাব যদি মাতাল করে অধেক, বাকি অধেক হয় নিলনয়না শাকিদের অবারিত সৌন্দযে্ । সেদিন সন্দা বেলা আমার সামনে বেশ বড় লাইন জমে গেছে। পরবতি ক্রেতাকে ডাকতেই তিন গৌড়ি সুন্দরী অতী সক্ষিপ্ত বসনে, সৌন্দয়েরর অপরুপা প্রদশন নিয়ে চোখের সামনে এসে হাজির। হাজির মানে—এতটা কাছে এসে হাজির যে নিংস্বাষে ওদের শরীরের গন্দ্ব পাচ্ছি। সংঙ্কৃতিগত কারনে চোখ যদিও চলে যছিলো মাটির দিকে, মন কিন্ত বলছে- যা হারাচছ তাকি আর ফিরে পাবে? সিগারেট দিয়ে যেইনা শুভ রাত্রি বলে বিদায় করতে যাচ্ছি , শুরার নেশায় আসত্ত প্রথম জন বলে কিনা- “প্রিয় বন্ধু, এতো কিসের তাড়া, একটু তাকাও, চেয়ে দেখো গোলাপের অপার সৌন্দয”। মুখে একটা হাসি ফুটিয়ে ভাবলাম- এই কি সৈয়দ মুজতবা আলীর সেই শহরে ইয়ার? সাধে কি আর ফেরদৌস সমরখন্দ বেচে দিতে চেয়েছিলো প্রিয়ার একটা তিলের জন্য।
April 2011
মাকসুদ আলম

Source URL: https://priyoaustralia.com.au/articles/2016/%e0%a6%a7%e0%a6%b2%e0%a7%87%e0%a6%b6%e0%a7%8d%e0%a6%ac%e0%a6%b0%e0%a7%80-%e0%a7%a9/