Article on Rabindranath by Ezaz Mamun

by Dr Ezaz Mamun | June 15, 2011 3:50 am

রবীন্দ্রনাথের অনন্য জীবনবোধঃ স্রষ্টা, প্রকৃতি আর মানব

এজাজ মামুন

রবীন্দ্রনাথ আমাদের কাছে এক অপরুপ আলো রেখে গেছেন-তা হলো তাঁর অনন্য সৃষ্টি।রবি ঠাকুরের সাহিত্য, কাব্য, কিংবা গান আমাদের মোহিত করে। প্রেম আমাদের আলোড়িত করে, করে প্রেমিক সাধক, ভালবাসার পুজারি।এই অনন্য সাধক রবি ঠাকুরের জীবনবোধ বা ধর্ম সাধনা তাঁর সৃষ্টিতে অনুপ্রেরনা জুগিয়েছে অনন্তর।বিশ্ব করির ধর্ম ছিল গতানুগতিক ধর্ম থেকে ভিন্নতর।তাঁর চিত্ত ছিল প্রতিনিয়তই সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞতায় আলোকিত।

সংস্কৃত থেকে আসা ধর্ম শব্দটির অর্থ হল- যোগসুত্রের নীতি (Principal of relationship), যা আমাদের দৃঢতার সাথে আবদ্ধ করে রাখে। বলা যায় কোন কিছুর নীতি্, তার মূল গুন হলো ধর্ম। রবিন্দ্রনাথ বলেছেন The wateriness of water is essentially its religion, in the spark of the flame lies the religion of fire, likewise mans religion in his innermost truth। মানব এবং পশুর মাঝে এক অনন্তর পার্থক্য রয়েছে। পশুকে তার ব্যক্তিত্ব বা জীবন অনুভুতি (Personhood/lifesense) নিয়ে ভাবতে হয় না কিন্তু মানবকে ভাবতে হয়। রবীন্দ্রনাথ মানবকে দেখেছেন এভাবে- Man as a creation represents the creator, and this is why of all creatures it has been possible for him to comprehend this world in his knowledge and in his feeling and in his imagination, to realise in his individual spirit that is everywhere। বলা যায়, জীবনবোধ মানব ধর্ম চেতনার পরিস্ফুটন। রবীন্দ্রনাথ মনে করতেন, এই প্রকৃতি প্রভুর আনন্দের সৃষ্টি। আর মানুষ হলো crown of creation। প্রকৃতি মানবকে শুধু আনন্দ দেয় না, তা তাকে শুদ্ধও করে। আমরা যেমন পানি কিংবা ফুলের সংস্পর্শে শুদ্ধতা অর্জন করে।

রবিন্দ্রনাথের মতে মানব, সৃষ্টিকর্তা আর প্রকৃতি বাস্তবে এক সূত্রে গাঁথা এক অবিচ্ছিন্ন বাস্তবতা।আর তাই তাঁর ধর্মের ভীত রচনা হয়েছে সৃষ্টিকর্তা, মানব আর প্রকৃতিকে নিয়ে। তিনি প্রভুর সাথে তাঁর যোগসুত্র সৃষ্টি করেছেন প্রকৃতির মাধ্যমে। আর তাই তাঁর সৃষ্টি, তাঁর গান, কবিতা কিংবা অংকন সৃষ্টিকর্তার মহিমাকে মহিমান্বিত করেছে।তিনি তাঁর মনের মাধুরি মেশাতে পেরেছেন তাঁর সৃষ্টিতে, হয়েছেন সার্থক এক রুপকার, শৈলি।

রবিঠাকুরের মতে পাপ হলো selfishness, এবং নিজের মধ্যিকার সত্যকে (innermost truth) বিকশিত করতে ব্যর্থতা। পাপ হলো প্রভুর বিরুদ্ধে নিজের স্বাধীনতা ঘোষণা। তিনি মনে করতেন, প্রভু জরা, জীর্নতা রোগ শোক দিয়েছেন মানুষকে তার গন্তব্য বুঝবার জন্য।

একজন সামাজিক নাগরিক হিসেবে রবিন্দ্রনাথ ঠাকুর দেশ প্রেমকে অনেক বড় করে দেখেছেন। তাঁর কাছে দেশের জন্য সরল আর অনাবিল ভালবাসাই ছিল দেশপ্রেম। আর তাই তাঁর দেশের গানগুলো এত হৃদয়ের কাছাকাছি, এত আনন্দের। তাঁর দেশপ্রেমই তাঁকে সাহস যুগিয়েছিল ১৯০৪-এ ভারত বিভক্তির প্রতিবাদে সোচ্চার হতে আর ১৩ এপ্রিল ১৯১৯ এ জালিয়ানওলায় ধ্বংস যজ্ঞের প্রতিবাদে এবং ঘৃনায় নাইটহুড (Knighthood) উপাধি বর্জনে।

এই মহান কবির সৃষ্টি প্রকৃ্তি কিংবা স্রষ্টার মহিমাকে খুজে পাবার এক অপরূপ পথের অনুসন্ধান দিয়েছে।কবির মত করে প্রকৃতিকে ভালবাসবার আর স্রষ্টার মহিমাকে কৃতজ্ঞতা জানাবার মাঝে যেন আমাদের হৃদয় সুশোভিত হয়। আমরা যেন রবি ঠাকুরের মত করে বলতে পারি-

হে বন্ধু মোর, হে অন্তরতর,

এ জীবনে, যা কিছু সুন্দর

সকলি আজ বেজে উঠুক সুরে

প্রভু তোমার গানে, তোমার গানে, তোমার গানে।

১৩ জুন ২০১১

Email: ezaz.mamun@uni.sydney.edu.au

2011/pdf/rabi120611_967294021.pdf[1] ( B) 

Endnotes:
  1. 2011/pdf/rabi120611_967294021.pdf: https://priyoaustralia.com.au/live/wp-content/uploads/files/2011/pdf/rabi120611_967294021.pdf

Source URL: https://priyoaustralia.com.au/articles/2011/article-on-rabindranath-by-ezaz-mamun/